“Anyone who believes in indefinite growth on a physically finite planet, is either mad or an economist.” – David Attenborough
১
দখল। এই বিষয়ে লিখতে বলে সম্পাদকমশাই একটি বহুমাত্রিক ও অনেকান্ত সম্ভাবনাকে লেখকদের সামনে খুলে রাখা সাদা পৃষ্ঠার দিকে ছুঁড়ে দিয়েছেন। এহেন একটি বহুস্তর আইডিয়া, যা ইচ্ছে করলে নিজেই নিজেই লিখিত হতে পারে, জানি না তাকে আদৌ কোনওদিকে চালনা করা যাবে কিনা। একান্ত ব্যক্তিগত স্মৃতির জায়গা থেকে ভাবা শুরু করা যাক।
বছর দেড়েক আগে এক সন্ধ্যায় শিশুপুত্রের সঙ্গে সময় কাটাচ্ছিলাম। সেদিন তাকে শোনাচ্ছিলাম বিশাল আমাজন নদী, নদীর দুই তীরে ঘন সবুজ অরণ্যে বড় বড় গাছ, নানা রকমের পশু ও পাখি আর ইয়াব্বড় একটা সাপের গল্প। যখন গল্প শোনাচ্ছিলাম, ঠিক সেই সময় অর্ধেক গোলার্ধ দূরে আমাজনের চিরহরিৎ অরণ্যটি আগুনে পুড়ে ছারখার হয়ে যাচ্ছিল। তখনও জানা যায়নি সেই দাবানলের উৎস কী। শুধু হেক্টরের পর হেক্টর জুড়ে অগ্নিদগ্ধ বনভূমি ও মরণাপন্ন পশুপাখির অসহায়তার ছবিতে ভরে উঠছিল সংবাদমাধ্যমের নিউজফিড। স্বাভাবিকভাবেই, কথার পিঠে কথায় বনে আগুন লাগার গল্পও উঠে এল।
চার বছরের শিশু হঠাৎ সহজাত সারল্যে প্রশ্ন ছুঁড়ে দিল, “বাবাই, এই আমাজনের জঙ্গল থেকেই কি আমাদের বাড়িতে জিনিসপত্র আসে?”
স্তব্ধ হলাম। কিছুক্ষণ মুখে কথা সরল না। ঠিকই তো। এখন অবধি সামান্য কদিনের জীবনে, সে দেখে ও শুনে যেটুকু অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছে, তা দিয়েই শিশুটি তার আশেপাশের পৃথিবীটাকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করছে। আজকের আগে কোনওদিন সে আমাজন অরণ্যের নাম শোনেনি, বরং মাসে একবার কি দুবার অ্যামাজনের কাকুকে বাড়িতে এসে একটি-দুটি জিনিস ডেলিভারি করতে দেখেছে। অতএব তার পক্ষে এহেন প্রতিক্রিয়া অবান্তর নয় মোটেই।
ঠিক এই টানেই তৎক্ষণাৎ ভেসে উঠল শিশুর পিতার অর্থাৎ আমার নিজেরই ছোটবেলার একটি স্মৃতি। দূরদর্শনে দেখা একটি শরবতের বিজ্ঞাপনে ব্যবহৃত জিঙ্গলের স্মৃতি।
বিজ্ঞাপনটি একটি পানীয়ের। একজন ভদ্রমহিলা তার সামনের দাঁড়ানো অনেকগুলো বাচ্চার মুঠো করে বাড়ানো হাতের দিকে তাকিয়ে জিঙ্গলটা গেয়ে উঠছেন – ‘নানহে মুনহে বচ্চে তেরি মুঠঠি মে কেয়া হ্যায়?’ বাচ্চারা সঙ্গে সঙ্গে হাতের মুঠো খুলে দেখাচ্ছে, সমস্বরে চেঁচিয়ে উঠছে- ‘রসনাআআআ’। দেখা যাচ্ছে, তাদের প্রত্যেকের হাতের তেলোয় একটা করে গুঁড়ো পানীয়ের প্যাকেট। হ্যাঁ, প্যাকেট। স্যাঁশে শব্দটা তারও অনেক পরে জেনেছি। আমাদের সে পানীয় কখনও খাওয়া হয়েছে বলে মনে পড়ে না, কিন্তু জিঙ্গলটা যেহেতু আকর্ষণীয়, তার সুরটা সারাজীবনের মতো মনে গেঁথে গিয়েছিল। তখনও জানি না, জানার কথাও ছিল না, সেই জিঙ্গলে একটি জনপ্রিয় হিন্দি গানের সুর ব্যবহার করা হয়েছে।
অনেকদিন পর, শৈশব পেরিয়ে প্রায় কৈশোরের শেষ প্রান্তে পৌঁছে গেছি, আসল গানটা অর্থাৎ যে গানের সুর নকল করে জিঙ্গলটা তৈরি করা, সেটা শুনলাম। এফ এম রেডিও নামে এক হুলুস্থুল ঘটনা ঘটছে তখন। সেখানে গানটা শুনেই চমকে উঠলাম। ১৯৫৩ সালের হিন্দি ছবি ‘বুট পালিশ’-এর গান। শৈলেন্দ্র-এর কথায় শঙ্কর জয়কিষানের সুরে আশা ভোঁসলে আর মহম্মদ রফি গাইছেন, ‘নানহে মুনহে বচ্চে তেরি মুঠঠি মে কেয়া হ্যায়/…./(এখানেও বাচ্চারা সমস্বরে গেয়ে উঠছে-) মুঠঠি মে হ্যায় তকদির হামারি…’।
এক ধাক্কায় সেই মুহূর্তের আকাশটা আমার কাছে বিশাল হয়ে গেল। রসনা-র জিঙ্গল বিজ্ঞাপনী প্রয়োজনে গানটার যে অর্থসংকোচন ঘটিয়েছিল, ওরিজিনাল ট্র্যাকটা গানটাকে মুহূর্তে তা থেকে মুক্ত করে দিল, গভীরতর অর্থের দ্যোতনায়।
পাঠক যদি কোনওক্রমে এতদূর অবধি পড়ে থাকেন, তাহলে তাঁর মনে হতে পারে, ‘দখল’ নিয়ে লিখতে বসে এসব কি গৌরচন্দ্রিকা শুরু হল আবার! তাঁকে ভাবতে অনুরোধ করব, দখলের সবচেয়ে ভয়ঙ্করতম সংস্করণ হচ্ছে মানুষের চিন্তা, মেধা, অনুভূতি ও মননের দখল নিয়ে নেওয়া। আর আমাদের সমাজ, পরিবেশ, এমনকি শিক্ষাব্যবস্থাও শিশুকাল থেকেই সেই দখল সুনিশ্চিত করে চলেছে।
তিরিশ বছরের ব্যবধানে, দুটি শিশুর কাছে, সাধারণ জ্ঞান বা এই পৃথিবীর অন্য অনেক কিছু পৌঁছে যাওয়ার আগেই বাজারের জার্গন ঠিক পৌঁছে গেছে। সেদিন বাপের কাছে বাজারের পৌঁছোনোর গতি অপেক্ষাকৃত মন্থর ছিল। আজ বিশ্বায়ন-পরবর্তী ডিজিটাল পৃথিবীতে সেই বেগ দ্রুততর, আলোকসামান্য। স্বাভাবিকভাবেই, শিশুমনে গুলিয়ে যাচ্ছে কোনটা দোকান, কোনটা জঙ্গল। অর্থসংকোচন ঘটছে। সেই সঙ্গে ঘটছে বিচ্ছিন্নতাও। ঘরের চারটে দেওয়াল ও মাথার ওপরের ছাদ ছোট হতে হতে যেন আরও বেশি করে চেপে ধরছে আমাদের।
২
শিশুকাল থেকেই এই দখলের প্রক্রিয়ার শুরু। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তা শিকড় ছড়াচ্ছে আমাদের যাপনে, বিশেষত, যে যাপন যদি নাগরিক হয়। অর্থাৎ এই দখলদারির প্রথম খুঁটিটি নাগরিক শিক্ষিত পরিবারের শিশুর মননে প্রোথিত হয়, পরবর্তীকালে একজন ‘শিক্ষিত’ ও ‘সফল’ নাগরিক হিসেবে গড়ে উঠবে।
কীভাবে শুরু হয় এই দখলদারির?
জমি তো অনেক আগে থেকেই প্রস্তুত হচ্ছিল। গত শতাব্দীকে আমরা সাধারণভাবে নগরায়নের শতাব্দী বলতে পারি। বিশ্বজুড়ে এক বিপুল সংখ্যক মানুষ জীবিকানির্বাহের সুবিধে ও জীবনযাপনের মানোন্নতির স্বার্থে বেছে নেয় নগরজীবন। ইতিহাসের নিয়মে খুব স্বাভাবিকভাবেই গড়ে ওঠে লক্ষ লক্ষ নগর। একইসঙ্গে, নগরে বাস করার জন্য চলতে শুরু করা সেই অসংখ্য মানুষগুলো প্রকৃতি-বিচ্ছিন্নতার দিকেও এক অনিবার্য যাত্রা শুরু করে। রুজি-রোজগারের জন্য তাদের প্রকৃতি নির্ভরতা ক্রমশ কমে আসে, রোদ-বৃষ্টি-জল-হাওয়ার কমবেশির ওপর নাগরিকের জীবন নির্ভর করে না আর। ঠিক যেমনভাবে, ‘একটি শীতের সকাল’ বা ‘একটি গ্রীষ্মের দুপুর’ নিয়ে রচনা লেখার জন্য আমাদের অর্থাৎ শহুরে ছাত্রছাত্রীদের মনে আর তেমন কোনও অভিজ্ঞতা বা অনুভূতি সঞ্চয় করা নেই।
আজ, একবিংশ শতাব্দীতে পৌঁছে এই প্রকৃতি-বিচ্ছিন্নতা আরও একধাপ এগিয়ে সমাজ-বিচ্ছিন্নতায় পরিণত হয়েছে। আজ নাগরিক মধ্যবিত্তের যাপন সম্পূর্ণ বাজারনিয়ন্ত্রিত, গ্যাজেট-নির্ভর ও ডিজিটাল, যে যাপনের অনেকটাই আবার প্রয়োজনের অতিরিক্ত। আজকাল নিকটতম প্রতিবেশীকে না চিনলেও দিব্যি চলে যায় আমাদের। বেঁচে থাকার জন্য একমাত্র ‘ডোমেস্টিক হেল্প’ ছাড়া নিজের অ্যাপার্টমেন্টের বা পাড়ার কোনও লোকের সঙ্গে যোগাযোগ না রাখলেও চলে। আমি যাঁকে চিনি, আমার বাবা নিয়মিত যাঁর বাড়ির প্রায় সবার খবর রাখতেন, আমার পরবর্তী প্রজন্মের আর প্রয়োজন পড়বে না পাড়ার মোড়ের দোকানের সেই মুদিটিকে। মোবাইল স্ক্রিনে আলতো আঙুল বোলালেই ফ্ল্যাটের দরজায় সরাসরি পৌঁছে যাচ্ছে রান্না করা খাবার, চাল-ডাল-তেল-নিন, কাঁচা সবজি এমনকি মাছ-মাংসও। অথবা ছুটির দিনে মাত্র এক ঘণ্টায় শৈততাপনিয়ন্ত্রিত ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে ঘুরে ঘুরে ন্যূনতম মানবস্পর্শ ছাড়াই করে নেওয়া যায় গোটা মাসের বাজার। এখনও গুগল থেকে রুটি ডাউনলোড করা যায় না বটে, কিন্তু বারোমাস কাদায় পা পুঁতে রোদে পুড়ে জল ভিজে যারা সেই রুটির জন্য গম উৎপাদন করে, তাদের সমস্যা তো দূরস্থান, তাদের অস্তিত্ব সম্বন্ধে কোনও ধারণা না রাখলেও দিব্যি চলে যায়। ঠিক যেমন, আপিসফেরতা পুরোটা পথ, চাইলে, ঠান্ডা বাসে, উবারে, নিদেনপক্ষে অটোর পেছনে বসে চোখে-কানে নেটফ্লিক্স-ইউটিউব গুঁজে সহযাত্রীর সঙ্গে একটিও কথা না বলে কাটিয়ে দিতে পারি আমরা। অতিমারির পরে অনেককে আর শারীরিকভাবে আপিসও যেতে হচ্ছে না। ‘ওয়র্ক ফ্রম হোম’ এখন আমাদের দেশে অনেক সাদা কলার কর্মচারীর জন্য চিরস্থায়ী বন্দোবস্ত। নিজস্ব শ্রেণির অতি ক্ষুদ্র একটি বৃত্তের বাইরে আর কারও সঙ্গে মেলামেশা না করেই, জন্ম থেকে মৃত্যু, একটা গোটা জীবন কাটিয়ে দিতে পারে এই জেন ওয়াই প্রজন্ম। বিচ্ছিন্নতার ষোলকলা পূর্ণ হয়েছে! আর মাত্র কয়েকবছর পর, সারা বিশ্বের শহরগুলিতে বাড়িগুলির দরজা ঠেলে বেরিয়ে আসবে (যদি আদৌ তারা ঘর ছেড়ে বেরোয়) এক শ্রেণির মানুষ, ‘আমাজন একটি অরণ্য নয়, আসলে একটি বিরাট দোকান’- একথা জেনে শৈশবে যাদের পথ চলা শুরু হয়েছিল।
এই পণ্যসভ্যতা সারা পৃথিবী জুড়ে এই বিশেষ শ্রেণির মানুষের জনবিস্ফোরণ ঘটাতে চায়৷ এই মানুষদের পরিচয়, এরা একধরনের শিকড়হীন সমসত্ত্ব সফল ক্রেতা৷ এরা সমসত্ত্ব, কারণ গোটা বিশ্বজুড়ে একইরকম ছাঁচে-ঢালা জীবনসম্পর্কহীন শিক্ষাব্যবস্থা ছোটবেলা থেকে প্রায় একইরকম মতামত, আত্মকেন্দ্রিকতা ও রাজনীতিহীনতায় এদের লালন করেছে, বাজারের উপযোগী করে গড়ে তুলেছে। এরা সফল, কারণ ট্র্যাডিশনাল উৎপাদন প্রক্রিয়ায় এদের সরাসরি যোগদান না থাকলেও, অথবা খুব কম যোগদান থাকলেও, তা থেকে প্রাপ্য মুনাফার একটা মোটা অংশে তাদের পকেট ভর্তি। এরা ক্রেতা কারণ আজকের বাজারের কাছে একজন শিক্ষিত কিন্তু ক্রয়ক্ষমতাহীন নাগরিকের চেয়ে একজন পোটেনশিয়াল কনজিউমারের মূল্য অনেক বেশি৷ মূলত, এই বিপুল সংখ্যক নাগরিক ক্রেতা ও কতিপয় বহুজাতিক বিক্রেতা মিলে এই গোটা পৃথিবীটাকে ভাগ করে নিতে চায়, দখল করে নিতে চায়। প্রাচীন ঔপনিবেশিক লুটপাঠের চেয়ে আরও ভয়াবহ, আরও বিধ্বংসী এই নতুন আগ্রাসন, যা এক সীমাহীন উৎপাদন ও ভোগ, একইসঙ্গে অনন্ত বৈষম্যের দিকে আমাদের নিয়তিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে।
পাঁচ বছরের শিশুমনে একটি বিজ্ঞাপনের সংকীর্ণ জিঙ্গল প্রতীকী অর্থে যে দখলের সূচনা করেছিল, তা একদিন আস্তে আস্তে গোটা ব্যক্তিকে, তার মনোভূমিকে দখল করে নেয়। কিন্তু যা আরও বেশি চিন্তার, তা হল, ব্যক্তিকে দখল করে এই আগ্রাসন থেমে যায় না। ক্রমে দখল হয় আকাশ, বাতাস, জল, মাটি, অরণ্য, নদী, উপত্যকা। ব্যক্তির প্রকৃতি-বিচ্ছিন্নতা সভ্যতার সাধারণ চরিত্র হয়ে উঠলে তার প্রভাব যে কতদূর সুদূরপ্রসারী হতে পারে তা আজ আমরা হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছি। উৎপাদন ও ভোগের দিকে আমাদের এই উন্মত্ত দৌড় প্রকৃত প্রস্তাবে এই পৃথিবীর কার্বন পদচ্ছাপ বহুগুণ বাড়িয়ে তুলছে, যা শেষমেশ পর্যবসিত হয়েছে বিশ্বব্যাপী জলবায়ু সঙ্কটে। আর এই উন্মত্ত দৌড়ে যাদের বিন্দুমাত্র ভাগিদারী নেই, জলবায়ু সঙ্কটের কুফল সবচেয়ে প্রথমে ভোগ করে সেইসব প্রান্তিক মানুষেরাই।
শেষ করার আগে বিচ্ছিন্নতার আরেকটি ভয়াবহ অভিমুখের কথা না বললেই নয়, তা হল মৌলবাদ৷ সম্প্রদায়গত দূরত্ব ও পারস্পরিক অপরিচয়ের গর্ভে মাথা তোলে ধর্মীয় মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা। রামা কৈবর্ত ও হাসিম শেখের শ্রমনিবিড় জীবন আজও এক অপরের নির্ভরশীল। গ্রামে, খেটেখাওয়া মানুষের কৌম সমাজে মানুষের ধর্মপরিচয় তাই সহজে মানুষে মানুষে বিভেদ ঘটাতে পারে না। কিন্তু নাগরিক প্রজন্ম নিজের গণ্ডীর বাইরে কাউকেই ভালো চেনে না। শিক্ষিত’ বিচ্ছিন্ন মানুষ অপর সম্প্রদায় সম্পর্কে তার বিপুল অজ্ঞতা ও ভাসা ভাসা তথ্যের ভিত্তিতে একটি সাধারণীকৃত সুবিধেজনক প্যাটার্ন কল্পনা করে নেয়। এই প্যাটার্ন অন্য সম্প্রদায়টির অপরায়ণে সাহায্য করে। জন্ম দেয় সাম্প্রদায়িকতার। সে কারণে মধ্যবিত্ত হিন্দু বাঙালির পাড়ায় জামশেদ আলি নামের কেউ ঘর খুঁজতে এলে তাকে ঘরভাড়া দেওয়া হয় না। এনআরসি- সিএএ-এর মতো একের পর এক সংখ্যাগুরুর আধিপত্যবাদী আক্রমণে কুঁকড়ে থাকে সংখ্যালঘু।
মনন ও চেতনার জমি দখল শুরু হলে তা ক্রমে মানুষের সত্তা এমনকি সভ্যতার আত্মাকে অধিকার করে নেয়। অথচ একজন মানুষের কতটুকু জমিরই বা প্রয়োজন হয়? নানহে মুনহে বাচ্চাদের হাতের মুঠোয় তাদের ভাগ্য তো শক্ত করে ধরা ছিল। আমাদের মুঠোয় কী রাখা আছে? উন্মক্ত ভোগ আর পারস্পরিক ঘৃণায় দীর্ণ এক ক্লান্ত অসুস্থ পৃথিবী আর অনন্ত শূন্যতাই কি আমরা রেখে যাচ্ছি আগামী দিনের জন্য?