
গতি পাতা যেন লাবণ্য ধরে আলোর পরে বাতাস ফিকে হয় আরতি করে বারবার জীবন উন্মোচনে ভেসে গেলে তুমিও জানো সকল কিছু একবারই মেলে আবরণের কাছে আমাদের নখ নিরীহ, আঁচড় কাটে না পরবশ মানে দুপুরের ভাঁজে মুশকিল নামে ভাঙা সাঁকোটির আকীর্ণ খোঁড়লে ভ্রমরের গতি ওড়ে, রোদমেখে ফুরফুরে জানালায় ভাসে বহুমুখ সূর্যলোকের সন্তান, আপন আপন অথচ নিজের ভেতর ছায়া নামে এই দেখাসংক্রান্ত বেলায় প্রান্তিক সুপার বাসের জানালায় একটি মুখ, বিলম্বে ছেড়ে যাওয়া ধরে যেভাবে থাকাকালীন হয় যখন একজোড়া পা নিয়ে না থাকার দিকে হেঁটে যেতে হয় যাবার বেলায় আমার কেন আমাদের নামেমাত্র পুরনো দেখার কথা মনে পড়ে যেখানে রোদ্দুরে মফস্বল আরও সিনথেটিক সুন্দর সম্পর্ক তাকাতেই মায়াময় একটি রক্তজবা ধরে ছড়িয়ে পড়ছে ফুলের স্মৃতি অথচ দূরে আছি কেউ ডাকেনি সম্পর্ক ধরে একটিবার খেয়াল করে দেখলাম সম্পর্ক হচ্ছে চালধোয়া পানি যাতে থাকে হাতের গন্ধ মেলাতে না পারা হাতের অনুতাপ। শীত ভ্যাগাবন্ড এবারের শীত নেমে এলে পাহাড়ে যাব সব গানহীন পাখিদের রাশিফল দেখব পাতার স্তূপে নির্জনতায় কিছুক্ষণ বসব তখন ফুলের নগ্নতায় ততদূর পথ যেন ছবির হৃদয় খুলে হাসবে মান্যবর পাহাড় ঝিঁঝিঁ বেজে ওঠা দিন, নির্ভরতার ঝরা পাতাদের ব্ল্যাকার সেজে নিবে মন আমার যদুকরী ভাব আর সুন্দরের সকল ধারণা ঘুম হতে আসবে, আধবোজা চোখের বিরহ এইসব মিথ্যে নিঃসঙ্গতায় রোদের অলিভিয়া অনেকদিনের ভেতর গড়পড়তা এই দীর্ঘ সন্ধ্যায় এক ছোট জলপাই গাছের কথা ভাবি আমাদের বাড়িতে অতটা সবুজ অতটা লাল নিয়ে কলপাড়ে পড়ে থাকতো যার পাতারা নিশ্চুপ মাঝখানে ছিল গাঁদাফুলের বাল্যকাল আর সবুজে ভীষণ প্রেমসংহিতা সেই আত্মবিস্তৃত রোদ জড়ানো বসে থাকায় একটি আঙুল বোলানো সকাল আমি কেবল তোমাকেই ধরতে চেয়েছিলাম- বিড়াল ঘরগুলো আলাদা, তবু কেউ আলাদা নই একটা বিড়াল আসে ঘরে বিড়ালটার হাবভাব ভালো না এক ছুঁচা বেহায়া এদিক ওদিক তাকায় একটু একটু কিছুক্ষণ ছেঁড়া অর্ধেক প্রত্যেকের ভেতর এই যেমন- কখনো আমি তার রান্নাঘর হলে তাড়াতে ইচ্ছে করে না আর চুনিয়া ডাকে ‘কাম অন ম্যান’ দিগন্ত, বিস্তৃত ছায়া ধরে বিপন্ন লাল মাটির দিকে পেছনে বিদায় মেলেছে ডানা… অভ্যর্থনা, গানের মতো রাঙা ছড়িয়ে পড়ছে বন সবুজ, সবুজ রিলিফ পাখিটি অতি-বেদনার পার্পল ফুলগুলোর গ্রীবা হেলে আছে আরও আরও পশ্চিমে অথচ তুমি বলছিলে— সকল জেগে ওঠা আদিবাসী দিনের কথা আর বেতফলের ভেতর সন্ধ্যা দেখা রিফ্লেকশন মানুষ কেমন ছোট হয়ে আসছে স্বপ্নের ভেতর দাগটানা থাকছে অন্যস্বপ্নের ক্যালেন্ডারের পাতা উলটে গেলে কোন কোন ফুলের দুপুর তাদেরও একা করে যেন চলে আসছি ফিরে আদরের যা কিছু তা শিশুর শরীর থেকে গন্ধ নিয়ে আসছে শিশুটি দেখতে স্মৃতির মতো। অর্পিত গানে দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকাই ঘড়িটা ভুলতে বসেছে একাকিত্বের নিদারুণ যন্ত্রণা সারাটা রাত, রাতের মধ্যযুগ ঝুলে পড়ায় ভাবি অন্ধকার সে -তো আমার আলো না হয় দেবতার ভাবি, বারান্দা ও গোলাপের বাহিরে কোন বাগান সে বাগান নয় ঘ্রাণে বন্যের অন্দর বিভ্রমে মেতেছে, কেউ পাশে নেই তবে আমি কার! আমাদের একই শহরে এত এত মানুষের মুখ ভালোবাসার কথা বলতেই কেন সতী হয়ে যাও একা ঝুটি এইতো রবিবার, এই যে মিয়ম্রাণ বর্তে দুই হাজার তেইশ সালের এক পৃষ্ঠার ভাঁজ যেখানেই যাই বায়ূঘূর্ণির মতো কাতর তবে আমারই নির্মাণ বৃক্ষবৎ দ্যুতির ক্রোমজম অযুত নিযুত কথার পাশে রাতের একিন মন সম্ভাষণ ব্যাকুল বাক্যে লুপ্ত অক্ষর আজ কানকোর বিন্যাস ধ্যানবিন্দুর সংকেত জানে অতীতের মনস্কামনায় তুমিও এক জীবন! পূর্বসন্ধ্যা জেনেছে একা, বাতাসে মিশেছে নদী কুড়াতে আসা সমুদ্র বালুকাতট

শুভ্র সরকার
জন্ম:মুক্তাগাছা ময়মনসিংহ
০৯ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯
প্রকাশিত কাব্যগন্থ
বিষণ্ন স্নায়ুবন (২০২০)
দূরে, হে হাওয়াগান (২০২১)
বাবা ও দৃষ্টিঘোড়া (২০২২)
সূর্যঘরের টারবাইনে (২০২৩)
প্রকাশিতব্য কাব্যগ্রন্থ
রামায়ণ থেকে ‘যাদুর সন্ধ্যা’
রোদের অলিভিয়া
সম্পাদিত ছোটকাগজ: মেরুদণ্ড
Facebook Comments Box