=========================================================

=========================================================
পরিচয় চুরি হয়ে যায়
মনে পড়ে একটা উঠোন আর তার চারপাশে বাহু ঘেরা ঘর।সবাই ঠিকানা পায়, ডাক পিয়ন এলে তুলে ধরে পরিচয়।একটা উঠোন থেকে একটা গ্রাম। গ্রাম পার হয়ে শহর, রাজধানী। এই তো সবুজ একটি দেশ।
আমরা হাসতে হাসতে ইস্কুলে যাই। পাড়ায় নাটক হয়,মধুমেলা ক্লাব। আমাদের হিন্দু স্যার অংক না পারলে মুঠি করে কিল দেয়, মৌলবি স্যার বেত নিয়ে আসে,ধর্ম ও সমাজ পড়ায়। গৌতম বুদ্ধ ও অশোকের কথা বলে।
ঘণ্টা পড়লে, রসরাজ মিস্ত্রির ছেলে গোপালের সবচেয়ে বড় শ্লেট নিয়ে আমরা পতাকা আঁকি। কামরুন নাহার, ভবানীদি আর সুবর্ণ বাড়ি থেকে টকবড়ই নিয়ে আসে। লাল মরিচের গুড়া আর লবণ মিশিয়ে মসজিদের সিঁড়িতে বসে আমরা খুব খেয়েছি। কেউ আমাদেরকে বলেনি কে হিন্দু,কে মুসলিম। সারাটা শৈশবে গীতা, বড় পুতলি, ছোট পুতলি আমার খেলার সাথী ছিলো।
বিশ্বাস করুন এখন কারো চোখের দিকে তাকাতে পারি না। রক্তে ভেসে যায় ঠিকানার বাড়ি। শিক্ষকের পোশাক দখল করে দানবের হাত। বেহেস্ত ও স্বর্গের ঠিকানা দীর্ঘ হয়েছে।
মানুষের কোন পরিচয় কী আর দরকার আছে আজ?