দুঃখ একলা নদের দুঃখে ভেসে যেতে ইচ্ছে করে, নদী স্রোতমুখ এখনো অচেনা তাদের পূর্বস্মৃতি রাত্রিদিন এখনো তাড়ায় আগুন—লাভার তাপে দগ্ধ হয় বুক কখন আসবে মারি, ঝড়ঝঞ্ছা, তারাপোড়া বালি স্বপ্ন দেখে, কেউ তাকে, সাবলীল, নীরবে থামায় একলা পুরুষদুঃখে ভেসে যেতে ইচ্ছে করে, নদী হাবা কোথাও যাব না বলে স্থির বসে আছি একা একা, গঞ্জনার তীরে বসে বসে পেছনের প্রতিও তাকাই দূর থেকে ঘাড় নাড়ে বেগানা হিজল তবু মনে হয়, তার পাশে, আড়ঠারে সর্প পাখি কীটেরাও মন্দভাবে ডাকে যেন আর যাবই না আমি বেতের জঙ্গলখানি সাফ করে দিয়ে পেছনের ঘুরপথও দশমুখে ডাকে খরাজীর্ণ প্রত্নমেলা সামনে নিয়ে যাব না ফিরব তার কিছুই জানি না বসে আছি নিমস্রোত গঞ্জনার তীরে প্রবাস একলা প্রবাসে আছে, ঘরে কবে ফিরবে ধীবর? এপারে করচ গাছ, অড়হর, সকলে একাকী; বাকিরাও চুপচাপ, পথপাশে জননী ও জায়া ফিরবে হিঙ্গুল রাতে, যদি পায় গোধূলির বর? শিকারি ঘনিষ্ঠ হলে টের পায় তিতনা ও পুটি; জাল ফেলা হয়ে গেলে, নিরুপায় মাছেদের ভিড়; তবু তো সকলে সেই স্বর—অন্ধ, কিছুই শোনে না : কোথায় মাৎস্যন্যায়, কোন স্থানে ধীবরের ত্রুটি। জলদাসী খরাগ্রস্ত, ঘূর্ণিবাত্যা, হৃদয় বেহাল নাগর—গঞ্জিত দেখে সধবাও হেলে—দুলে হাসে; গুঞ্জরন, বিলপারে, কথা ওঠে ধীবরপাড়ায় : ধীবর ফিরলে ঘরে, ফের সে কি হাতে নেবে জাল?
Facebook Comments Box