১ পেটফুলে আকাশটাও যেন বিষন্নতার নাটক করছে। একা থাকার অভ্যাস আমার কোনোদিনই ছিল না। আমার ছায়াকেও মাঝে মধ্যে ভূতুড়ে গাছের মতন মনে হয়। এই মনে হওয়াগুলোকে জড়ো করে একটা লম্বা দৌড় দিয়েছি। জন্ম থেকে যে ছায়াটা আমারই মতন বুড়োটেপনায় বড় হয়েছে, তাকেও পোষা গেল এত দিনে। দীর্ঘ চল্লিশ বছর ছেনালি মারানো আমার হৃদয়ের সুড়সুড়ির এই অধ্যায় মৃত বলে ঘোষণা করেছি। নাহলে সেই আমি ছোটবেলায় পৈতে কানে গুঁজে মোতার সময়, কান থেকে পড়ে কতবার যে পৈতে ভিজে গেছিল... ২ বিশ্বাসের পুঁটকিমারা গেছে সেই কোন কালে। এখন দেখা হলেই ভাবি আবার তুমি কবিতার কথা বলে পিঠ চুলকে দেবে! সেই সময় সাদাকালো টিভিতে রামায়ণের নাটক দেখার সময় আমার বাড়ির লোকেদের দেখেছি কেঁদে ভাসিয়ে দিতে। কী যে বিশ্বাস উঠেছিল! আমিও ওই ফাঁদে পা দিয়ে অনেকটা রাস্তা নীল লাল পাথরের বালের স্বপ্ন নিয়ে চৌবাচ্চা খুঁজে গেছি। এখন এই বালন্তকালে যখন নিজেই নিজেকে দেখে চোদনা আর গান্ডু ভাবি। তখন আর কবিতার বিপ্লবী হয়ে আকাশ গোনার শব্দ টোকা মেরেও দেখি না... ওটারও কিছুদিন পর মারা যাবে... বিশ্বাস তো আমাদের বহুদিন আগেই ফেটে গেছে! ৩ সেজদাদুর কাছে ছোটবেলায় বিচিত্র সব ভূতের গল্প শুনেছিলাম। তেমনই কিছু জ্যান্ত ভূতের সঙ্গে দেখা হয়ে আমার জীবনের ল্যাওড়ালোচন হয়ে গেছিল। আমার মতন হাজার হাজার এঁড়ে চিন্তাশীল প্রগতিশীল বিপ্লবীদেরও দেখেছি শনি মঙ্গলবার নিরামিষ গায়ে মেখে কালো শালিকের মতন ডাকাডাকি করতে...! আসলে এই ফুসমন্তরগুলো ভালোবাসার মাদুলির মতন তুমি চাইলেই ঝুলিয়ে রাখতেই পারো। সেই মাদুলির ভেতর একগাছা বালের চুলও থাকতে পারে... তেনারা বলতেও পারে আসলে এটার মধ্যেও কবিতার ভূত আছে! ৪ নিজেকে বহুবার খাটাপায়খানার মতন মনে হয়েছে। আমার সেজদাদু যখন পটল তুললো তখন পটলের দাম অনেক! নিহত দেয়ালে মাতাল হয়ে অনেকবার ভবিষ্যতের বাণী শুনে দেখেছিলাম... ওরে ভগবানের হিসু কুকুরের ছায়া যেন তখন রবীন্দ্রসঙ্গীত গাইছে। উফফফ কী মায়া! এখনও একা একা হাঁটার সময় নিজেকে শিশুসুলভ শৌচাগার মনে হয়। মাটির সঙ্গে আমার ওজন অনেক দিনের। ডান পা দিয়ে ঠেলে দিলেই কত কত ভানকি চেপে ধরে। নাহ্ আমি কোনো ঈশ্বরের বুক পকেটে রাজনৈতিক সভা ডাকিনি। আমাদের টিকটিকির ঝরে যাওয়া লেজ খুব প্রিয়। দিনসূচির আগে কতটা জ্যান্ত ভূতের লিকার জমেছিল আমাদের আস্তাকুঁড়ে..

গল্প-গদ্যকার
সোমানাথ ঘোষাল পেশায় মিউজিক কোম্পানির পরিচালক
ডকুমেন্টারি ফিল্ম মেকার
Facebook Comments Box