১ আমাদের ফেব্রুয়ারি সামান্য একধরনের ঔজ্জ্বল্য আচমকা বিদ্যুৎ শুধু জঙ্গল অথচ তার অদূরেই ব্রিজ অপরিহার্য রাস্তা যেমন বজ্র ও দিগন্ত, যেমন কল্পনাতীত তুষার ও ডুলুং নদী তেমনই আমার কথা, যেমন বাড়িকে তার ভিত সমেত ওপড়ানো যায় না যেমন শুধু ভাঙন ও নদীর পাড় ইমারত ও পরিবর্তনের লোভ শুধু থেকে যায় চেনা রাস্তা দিয়ে বাড়ি ফেরায় জঙ্গলের মত হিংস্র শান্তি আমরা তাকে খুঁজে পাবো বেড়ালের আঁচড়ে যেভাবে তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান ২ অপেক্ষা আসলে দৈববাণীর মত সমস্ত ভাষাই পিঁপড়ের সারির মত স্বাভাবিক হওয়া উচিত যে কোনও শব্দই পরিবর্ত খেলোয়াড় অথচ যোগাযোগ এখনও একটা সম্ভাবনা বলে মেনে নিই লাফিয়ে উঠেছি প্রতিটা সাক্ষাতে ছিটকে গেছি উপলে পাথর এমনকি স্ফুলিংগ প্রতিটা ফেরার রাস্তা বন্ধ হয়ে আসছিল প্রতিটা বৃষ্টির দিন নদীবর্তী অবিসর্জন ধরে রাখা তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান ৩ কামনা কথায় জড়িয়ে ছড়ানো বই কার্পেট ও গ্রীষ্মশরীর যেভাবে শিশু বিড়ালের উলের গোলা অথচ সন্তর্পণ, সামান্য ভয় থেকে যায় যেভাবে বিশ্বাস করতে সময় লেগেছে কবিতার কোনও সমাজমূলক নেই মেনে নাও এ রহস্য সংঘর্ষ প্রবণ শব্দ ফিরে আসতে পারে প্রতিফলিত ধ্বনি ও উল্লাস থেকে বহুদূরে তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান বায়ুমণ্ডল, প্রবেশ ও উল্কার মধ্যে চমক আছে, দর্পণ ও পারদ বিনুনি দেওয়া ভস্মবৃষ্টি ৪ বাতাস জুড়ে নিচ্ছিল সংকেত লিপি, আলোর আঠা আমরা সামান্য পিছিয়ে লক্ষ্য করছিলাম ভাজা পেঁয়াজ দুপুর ও তার শরীর ঘিরে নেওয়া এশহরে আমাদের ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা একধরনের তুষার-বিস্ময় রাতের বেলা আসা গান বা তপতপে একটা মনোজ কুসুম জানে জল আমাদের প্রেম উশকে দিয়েছে জাতিগতভাবে শুধু বিঘত খানেক মাকড়শার জালে আলো হিমায়ন আমাদের পিছিয়ে দেয় আমরা ভাবতেও পারিনি মিছিল বা বিক্ষোভের আর কোনও অর্থ থাকবে না বিগত কোনও প্রজাতির মত স্তব্ধতা শুধু জীবাশ্ম তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান ভাষা এক মারাত্মক মাটি যা আমাদের হাতে ক্রমশ ফ্যাকাশে একটা মৃৎপাত্র আমরা অবিশ্বাসে ভরে করে পিছনে তাকাবো ভঙ্গুরতা ও আমাদের ভাষাপাত্রের টুকরো কিন্তু শ্বাসকে দীর্ঘ করে তুলবো না শুধু কথ্য হয়ে থেকে যাবো বড়জোর একশো বছর ৫ ফার্ন দেখলেই ডাইনোসরদের কথা মনে আমার শিহরন হয় ভাবলে যে এই পম্বু গ্রামের ট্রি ফার্নের নিকট পূর্বজ দেখেছে বিকেলের হলদে ছায়ায় সেই সুবিশাল জানোয়ার এই যে দেখা শব্দটায় জোর দেওয়া মানে মানুষ কেন্দ্রীক একটা বৃত্ত ও তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান আমি একেই অস্বীকার করতে চাইছি কারণ এই গ্রামজ কিশোর জানে পাথর শ্যাওলা আসলে পোকাদের আমরা কখনও পোকাবিকেলের ক্রিমসনে দেখা করিনি বা আমাদের অপেক্ষা কখনই মানুষী বাক্যাতিরিক্ত কোনও স্তব্ধতা হয়ে ওঠেনি হয়ত দৃষ্টি হয়ে উঠতে পারত পুঞ্জাকার কোনও ভঙ্গি প্রেমিকের দ্রুতি সন্ধিপদের হালকা চলা ৬ অথচ আমি কিন্তু বাঁশে ফুল আসতে দেখেছি ওপড়ানো কদম গাছের শিকড়ের ফ্যাকাশে আমি বহন করি শিরায় এ পৃথিবীতে আসলে কিছুই কোনও কাজে লাগে না এই স্পষ্ট জ্ঞান নিয়ে গ্রীষ্মদুপুর সংশ্লিষ্ট বর্তমান পুকুরের দিকে লতিয়ে চলে ৭ আসলে সমস্ত কালই বন্ধ্যা যখন সবকিছুই অতীতভাষ্য তখন কবিতা কোন দিকে যাবে মাথা না ঘামানোই ভাল আমরাও মৃত কবিদের বাড়ি খুঁজে বের করেছি, সেই সব এলাকা থেকে অনির্দিষ্ট গন্তব্য প্রবণতা চিহ্নিত করেছি যেমন বারবার বৃষ্টি পরিধির বাইরে উড়তে চাওয়া পাখি আমাদের একত্র থাকা আসলে ওই উড়ানজেদ তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান ৮ চারপাশে যখন সমবেত প্রতিবাদ এতদিনের স্থিরতার শুকনো ফল কে পারদ যন্ত্রে মেপে দেখা ভাবি ঘুরিয়ে দেওয়া যাবে এতদিনের অতীতকামী প্রবাহ দুপুর কে ভয় পাওয়ানোর মুখোশ আমরা তৈরি করে নেবো যেমন এদেশে জল ও আগুন জড়িয়ে থাকে মৃত্যুর সঙ্গে তেমনই তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান একটা চাবিকাঠি আমাদের জলের কাছাকাছি বিকেল হয়ে ওঠার অথচ আমাদের গোপন ইচ্ছা খেলনা রাজ্যের বিপ্লবী নেতা হওয়ার ক্ষুধা নিয়ন্ত্রণকারী আঙুল ও সন্ত্রাস শুধুই বাতাসের তৈরি আসবাব হয়ে উঠছি আমরা ৯ যেন বোলতার দল আচমকা আবিষ্কার করে নিয়েছে পাখিতে খাওয়া আম পাশেই কারও লাশ ও তার ঝোলার বাঁশি নতুন এক দানবীয় পুতুল নির্মাণে মেতেছি আমরা তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান তৈরিতে রাস্তা কখনই বাঁকে না বাস্তুকারের অনিচ্ছায় মোড়ের জ্যামিতি জুড়ে নতুন বেসাতি বিকেলের গ্রীষ্মরং আবার ভোটের দিন একধরণের কাগজের বাদ্যযন্ত্র আমরা একধরণের ছায়া না তৈরি করতে পারা অ্যাসিড রৌদ্র জমাট ভাবনার মত অসহ্য কোনও উপমা কেন এই ফোসকা পড়া বাস্তব ? কেন এই ফালতু বাগবিধির সামনে মাথা গুঁজে পালানো? কেন আমাদের নৈঃশব্দ্য ওদের খুলি ফাতিয়ে দিতে পারছে না? ১০ যেন সদ্য শিশু সহস্র মাতৃগর্ভে ফিরতে চাইছে যেন এক সদ্য মা জঙ্গলে খুঁজে চলেছে অমরা পুঁতে রাখার মাটি যেন এক মাটি ও তার উপর ভারি পশু চলাচলের দাগ স্বপ্নের দ্রুতির মসৃণতায় ধীর লয়ে ছোপ পড়ছে অব্যবহারের যেমন শারীরিক যন্ত্রণা আসন্ন বার্ধক্য ইত্যাদি আমি সরে এসেছি সমাজ-মূলক থেকে তাদের সংশ্লিষ্ট বর্তমান একটানা অন্ধত্বের সামনে তীব্র আলোক জন্ম বধিরের সামনে নৈঃশব্দ্য হ্যাঁ আমি চেয়েছিলাম ওয়াটারলিউড বলে কোনও সঙ্গীত পর্বের নাম খুঁজে পেতে দমবন্ধ করা সমস্ত রকমের জানলায় আছড়ে পড়া শিলা ও আমার বাদলধারার আয়নায় এসো হে নামক নিশিথরাত
শুভ্র বন্দ্যোপাধ্যায়
জন্ম ১৯৭৮, কলকাতা। প্রকাশিত কবিতার বই ৫টি। বৌদ্ধলেখমালা ও অন্যান্য শ্রমণ কাব্যগ্রন্থের জন্য সাহিত্য আকাদেমির যুব পুরস্কার, পেয়েছেন মল্লিকা সেনগুপ্ত পুরস্কারও। স্পেনে পেয়েছেন আন্তোনিও মাচাদো কবিতাবৃত্তি, পোয়েতাস দে ওত্রোস মুন্দোস সম্মাননা। স্পেনে চারটি কবিতার বই প্রকাশ পেয়েছে। ডাক পেয়েছেন মেদেইয়িন আন্তর্জাতিক কবিতা উৎসব ও এক্সপোয়েসিয়া, জয়পুর লিটেরারি মিট সহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সাহিত্য উৎসবে। অংশ নিয়েছেন Poetry connections India-Wales প্রকল্পে। দক্ষিণ আফ্রিকার কবি আরি সিটাস, ও স্পেনের কবি ফেরমিন এররেরোর সঙ্গে লিখেছেন যৌথ কাব্যগ্রন্থ।
Facebook Comments Box