১ এই সে যুদ্ধক্ষেত্র, যেখানে অতর্কিতে মদের ট্যাঙ্কার উলটে গিয়েছিল, তারপর যুদ্ধ আর বেশি দিন স্থায়িত্ব পায়নি। ওঁ যজ্ঞভূমি, ওঁ বৈরীতা, ওঁ নিশিকাল মাটির ভেতর যে মদ চুঁইয়ে নামছে, তা যেন একদিন গম ও বার্লির চারা হয়ে জন্মায়। আপাতত আকাশ স্পর্শ করা শিং, অগ্নিস্রাবি চোখ আর নাসারন্ধ্রের এক প্রাণী মদমত্ত... আমাদের মাথার ওপর তুলে আছড়ে ফেলছে ওঁ শূন্য, ওঁ পূর্ণ, ওঁ কালের ভেতর ঢুকে যাওয়া কাল ২ নিষাদ; তাঁবু উড়িয়ে দিতে আসছে সৌরঝড়। আজ থেকে প্রতিটি মুহূর্ত কালসাপ- কোন ঘোটকের পিঠে চেপে এসেছিলে... প্রতারক গমনপথের ধুলো, প্রতারক সরাইখানার অভ্যর্থনা পিঙ্গল পাশার মূর্তি, রহস্যের ছক নমস্কার করে তার যোনির ভেতর ঢুকেছিলে এই রাত্রি দ্বিপ্রহরে, দেখো, অশ্বের কাটা পা- অলীক চক্রের ব্যুহ; গলায় মৃত্যু ওঠার আগে, এই সে মাহেন্দ্রক্ষণ আবিষ্কার করো- কৃষিকাজ, ফসলের থেকে ছিঁড়ে ফেলো নিয়তির ত্বক ও জৌলুস ৩ রয়েছে জলের শব্দ। রয়েছে অছিলা, রণ-কাম নখরে বিঁধেছে প্রসারণশীল তরুণাস্থি, ঝিল্লি, দু’-চোখের মণি। রয়েছে রক্তের কুলকুল। মেধাবী তাপস ও সূত্রধর; ভোররাতে অঙ্গি্রার দেহ থেকে ঝরছে শিবিকাবাহকের গান। মায়া-প্ররোচনা যাও, নারী-সহযোগে যাও, কলসি উপুড় করে উচ্চারণ করো- বিচ্যুতি ক্ষালন করো, ক্ষালন করো অসময়ে ঘুম ও অমনোযোগ, যেন এই অনুসারী কর্মে ভাণ্ড ডুবে যায়, যেন প্রধান-হত্যা ও হিংসা পূর্ণতা পায়; সফলতা পায় ৪ এ-আমি রণক্ষেত্র; ত্রিমুখী প্রকাশ- অন্ন, সোম, সুরা (কিন্তু শিশ্ন একটিই)। দেব-পুরোহিত, অথচ অসুরীমাতার রক্ত বইছে আমিই সে-যানের স্বয়ংক্রিয়তা, একই গর্ভে প্রোথিত দৃঢ়মূলা (অথবা তার থেকে উত্থিত) দু’টি স্ট্র। প্রথমে বিশুদ্ধ কষায় তরল গলাধঃগরণ করি- তারপর, বিপরীতে থুতু ভরে দিই। হুম, রণবাদ্য, রণতূর্য জাগতিক ও মহাজাগতিক বস্তুসকল, অন্তর্গত রোষানলে বিরুদ্ধে স্থাপিত অতএব, একমুখী রুদ্রাক্ষের বশে শিরোচ্ছেদ হোক, হোক উষরক্ষেত্র; লোহিত বর্ণের বৃক্ষনির্যাস; নির্বিঘ্ন পুরুষসঙ্গ হোক রজস্বলা রণক্ষেত্রে জরায়ুবিহীন নারীই সম্পদ- অবিরাম উপদ্রবহীন সংগম হোক ৫ মহিষ-অসুর; হে, বর্শা রক্তপাত। বুক-চেরা, আলো-চেরা দিনরাত হে, দেবীর মধুক্ষরা-হাসি হে, আয়তক্ষেত্র, হে, আয়তলোচন তুমি দ্বিবিধতা অনিবার্য। দেবীর অসুর ৬ ঘুমন্ত পশুর দল; স্বপ্নে তেষ্টা ঘন হয়ে আসে লাফানো চাঁদের শুঁড়িপথ। পাথরের ভূমিরূপ। দূরে খরস্রোতা আছে। জলের শরীরে, অতএব, শব্দ দাও। ঘুম থেকে ডেকে তোলো অরণ্য-সংসার দাও, ইশারার শ্বাসরোধ। নিশিডাক দাও ৭ এ-শিল্প ধূলিভক্ষ্য, স্বেদভক্ষ্য, মাঝরাতে অচেনা দেবীর বন্দনার কাছে জেগে ওঠা তালবাদ্য। বহুমেধা সোম আমার তীব্র গতি নাও… মৃত্তিকা অভেদ অগ্নি। কোন দূর অন্ধকারে মহিষ ও অশ্বের বন্ধন খুলে যাচ্ছে; আমি চর, আমি অন্তর্ঘাত তবু কোন মূঢ়, লৌহমল-স্নায়ু রজতমুদ্রা রাখে; ভাবে বিনিময়যোগ্যতার কথা। আমি অক্ষিকোণ দিয়ে মাটি থেকে আলপিন তুলি আমি দাঁতে চেপে রুপোর চাকতি তুলি মাটি ওড়ে আগুনের মতো; ভাসমান আগুনের বুকে জন্মায় তরুলতা, প্রতিরোধী-গাছ ৮ রাত্রি ধাতুর চাঁদোয়া। স্তব্ধতার আর্তনাদে তারারা জ্বলছে তরঙ্গ বিশাল আর ক্ষুদ্র জলযান; মাতৃধর্মে তবু পুষ্টতার প্রহরযাপন… দূরে স্থল, নভস্থল জলচিত্রে পাথরের রথ। অংশত চূড়া… অংশত অপূর্ণ-চাকার শব্দ যদি দেখ অতৃপ্ত দেবতা, প্রায়-জগন্নাথ, নিজের হস্ত-পদে লৌহ-ছেনি আঘাতের নাদ, আর সারাদিন স্যন্দনের নির্মাণে রত
পার্থজিৎ চন্দ
কবি হিসাবে আত্মপ্রকাশ শূন্য দশকের প্রথম দিকে। প্রথম কাব্যগ্রন্থ ‘ছদ্মনকশা ও প্রসাদের
গান’ প্রকাশিত হয়েছিল ‘কৃত্তিবাস’ থেকে। তারপর একাদিক্রমে প্রকাশিত হয়েছে
মেষপালকের ডায়েরি, বালিঝড় ও কেবিন বয়, ধান্যলক্ষ্মী, ক্যাসিনোয় লেখা
কবিতা, বাংলা, পর্ণশবরী, দূরগামী আলোর শরীর, মেফিস্টফেলিস ও নরসুন্দর
ইত্যাদি কাব্যগ্রন্থ। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে গল্প গ্রন্থ ‘আটলান্টিক ও অক্টোপাস’। প্রকাশিত প্রবন্ধ-গ্রন্থের সংখ্যা দুই। ইংরেজি ভাষা ও সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। প্রিয় বিনোদন গান শোনা ও ছবি দেখা।
Facebook Comments Box