১
১৬০৮ সাল। ভারতে প্রথম পদার্পণ করে ইংরেজ বণিক। মোঘল সম্রাট জাহাঙ্গীরের অনুমতি নিয়ে সুরাতে নির্মিত হয় প্রথম ইংরেজ বাণিজ্যিক গুদাম। পলাশীর যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে, বণিকদের শাসক হয়ে ওঠার কাহিনী সম্পর্কে সকলেই অবগত। বাংলা, মারাঠা, মহীসূর, শিখ এবং অন্যান্য প্রদেশ জয় করা ইংরেজ বণিকদের শাসনে বিদ্ধ হয় দেশ। সমগ্র ভারতবর্ষ ইংরেজদের দাস। ১৮৫৭-র সেপাই বিদ্রোহের পর ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি-র হাত থেকে দেশের দখল চলে যায় মহারাণী ভিক্টোরিয়ার অধীনে।
ইংরেজরাই প্রথম নিয়ে আসে ইংরেজি মাধ্যমে পাঠন এবং বাঙালির অতি প্রিয় ফুটবল। কথিত যে উনিশ শতকে নগেন্দ্রপ্রসাদ সর্বাধিকারী প্রথম গোরাদের ফুটবলে পা দিয়েছিলেন এবং পরবর্তীতে তাঁরই হাত (থুড়ি, পা) ধরে কলকাতার মাঠে ফুটবল খেলার প্রচলণ হয়। এরপর গড়ে ওঠে ভারতের প্রাচীনতম দুই ফুটবল ক্লাব – মহমেডান এবং মোহনবাগান। কয়েক দশক পর ইস্টবেঙ্গল। ১৯১১-এ গোরা ক্লাব ইস্ট ইয়র্কশায়ার-কে হারিয়ে আইএফএ শিল্ড জেতে মোহনবাগান। দশক পরে শুরু হয় বাঙাল-ঘটি দ্বৈরথ। লাল-হলুদ বনাম সবুজ-মেরুন। ইলিশ-চিংড়ির কড়চা। পাড়ায় পাড়ায় আড্ডা, তর্ক বিতর্ক।
অবশ্য কলোনিয়ালিসম অথবা দখলদারীর ইতিহাস দীর্ঘ। ইজিপশীয়, মেসোপটেমিয়া, হরপ্পা, চীন – সমস্ত প্রাচীন সভ্যতাই কোনও না কোনও সময়ে আক্রমন এবং দখল করা হয়েছে। মধ্যযুগে সোনার লোভে লাতিন আমেরিকা অথবা হিরের লোভে দখল হয়েছে আফ্রিকা। এখনও এই দখলদারী অব্যাহত। ১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে ইংরেজরা দেশ ছেড়ে গেলেও ভারতীয়রা ততদিনে শিখে ফেলেছে দখলের নিয়ম এবং পন্থা। বাঁধ নির্মাণ এবং উন্নয়নের কারণে অধিগ্রহণ, উচ্ছেদ অথবা রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির বেসরকারিকরণ – সবই একপ্রকারের দখল। এবং বর্তমানে ভারতীয় ক্রিকেট এবং ফুটবলও এই দখলের আওতায় চলে এসেছে।
আধুনিক সমাজে দখল অনেক প্রকারের হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ আমাদের দেশ ভারতবর্ষ। আমাদের পার্শ্ববর্তী একটি অঞ্চল হল পাক অধিকৃত কাশ্মীর। রাজনৈতিক কারণে এই অঞ্চলটির ওপর ভারতীয় সরকারের কোনও শাসন নেই, আবার সরকারিভাবে এই অঞ্চলটি পাকিস্তানের মধ্যেও পড়ে না। অথচ এখানের শাসনকর্তা পাকিস্তানি সরকার। এও এক প্রকার দখল। একবিংশ শতাব্দীতে এই দখলদারি হামলা চালানো হল খেলার মাঠে। প্রথম উদাহরণ সম্ভবত ২০০৮। ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) চালু করল আইপিএল। অর্থাৎ বিপুল পরিমাণ টাকার পরিবর্তে ভারতের নিজস্ব টি-টোয়েন্টি লিগ। কোটি কোটি টাকার ফ্র্যাঞ্চাইসি বাণিজ্যে ছেয়ে গেল ভারতীয় ক্রিকেট। বিপননের বাজারে নিলামে চড়লেন সচিন তেন্ডুলকর, সৌরভ গাঙ্গুলি, রাহুল দ্রাবিড়, ভিভিএস লক্ষণ এবং শতাধিক দেশি-বিদেশি তারকা খেলোয়াড় যাদের মধ্যে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, জ্যাক ক্যালিস, ব্র্যান্ডন ম্যাককালাম, কুমার সাঙ্গাকারা, মাহেলা জয়বর্ধনে অগ্রগণ্য। প্রমাণিত হল যে আগামি দিনে ক্রিকেট বিশ্বকে শাসন করবে ভারতীয় বোর্ড।
ভারতীয় ক্রিকেটের এহেন বাণিজ্যিক দখলদারির সঙ্গেই এলো শত্রু দমনের পালা। অর্থাৎ একাধিপত্য। আইপিএল-এর বিরোধিতা করে চালু হয়েছিল বিদ্রোহী লিগ আইসিএল। যাকে পূর্ণ সমর্থন করেছিলেন কপিল দেবের মতো প্রাক্তনেরা। কিন্তু মাত্র ২-৩ বছরের মধ্যেই বন্ধ হয়ে গেল আইসিএল কারণ কোনও বিপনন সংস্থা আইপিএল-এর বিপুল লাভের অঙ্ক ছেড়ে সমর্থন বা স্পনসর করল না এই বিদ্রোহী লিগ। ফলে আইসিএল-এ খেলা রিতেন্দর সিং সোধি-র মতো বহু তরুণ ক্রিকেটার চিরতরে হারিয়ে গেল ক্রিকেটের মানচিত্র থেকে। একইভাবে ভারতীয় ফুটবলে আইএসএল চালু হওয়া থেকেই ভারতীয় ফুটবল জর্জরিত হতে থাকল এরকমই বাণিজ্যিক অধিগ্রহণে।
অবশ্য মেরুদণ্ডের এই জোর দেখাতে ব্যর্থ হয়েছেন ভারতীয় ক্রীড়া আধিকারিকরা। আসলে এটাই বাস্তব। যে দেশের প্রাক্তন মন্ত্রী পশুদের খাদ্য চুরি করে জেলে যান, কর্মসংস্থানের বদলে বড় বড় ভাষণ এবং অন্যদের দোষারোপ করা হয়, যে দেশে বিভিন্নভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পত্তির বেসরকারিকরণের জন্য নির্দ্বিধায় ব্যবসায়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয়, মন্ত্রীরা গিমিক করেন অথবা ফেসবুক লাইভ – সেই দেশে এটাই তো স্বাভাবিক ঘটনা। আমাদের দেশে অলিম্পিকে যাওয়ার আগে কোনও ক্রীড়াবিদকে আর্থিক সাহায্য করা হয়না। যদি তারা কোনও পদক জিততে পারেন, তাহলে বাণিজ্যিক স্পনসরশিপে তাদের অভ্যর্থনা জানানো হয়। আসলে এও একপ্রকার দ্বিচারিতা এবং কর্পোরেট অধিগ্রহণ।
বর্তমানে এইক্ষেত্রে সবথেকে ক্ষতিগ্রস্থ ভারতীয় ফুটবল। আমার-আপনার-আমাদের প্রাণ – ইস্টবেঙ্গল – নোহনবাগান। ২০১৪-র পর যখন আইএসএল শুরু হয়, বাণিজ্যিক কারণেই তার জনপ্রিয়তাকে শীর্ষে তুলে ধরা হয়। ধীরে ধীরে কমতে থাকে ঘরোয়া লিগের মান। একে একে বন্ধ করে দেওয়া হয় বিভিন্ন ট্যুর্নামেন্ট – ডুরান্ড, রোভার্স, ফেডরেশন কাপ এবং আইএফএ শিল্ড। এখনও এই ধারা অব্যাহত। অর্থাৎ দখলদারীর এক সম্পূর্ণ নতুন পন্থা এবং প্রেক্ষাপটে মুড়ে ফেলা হয়েছে আমাদের যাবতীয় স্বপ্ন এবং আনন্দ।
২
ভারতীয় ফুটবলের একটা বড় সমস্যা হল তার ফিফা র্যাঙ্কিং। ১০৫ নং স্থানাধিকারি এই দেশ ফিফা বিশ্বকাপ খেলার যোগ্যতা অর্জন করতে পারেনি। প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে অসংখ্য গোল খাওয়া ভারত কিন্তু ফুটবলের ধারে এবং ভারে পিছিয়ে নেই। বহু স্বনামধন্য ফুটবলারের পায়ের ধূলো পড়েছে এই দেশের মাটিতে যার মধ্যে আছেন – ফুটবল সম্রাট পেলে, দিয়েগো মারাদোনা, অলিভার কান এবং লিয়োনেল মেসি। একবার বায়ার্ন মিউনিখের পুরো দল এসেছিল যাতে ফিলিপ লাম, বাস্তিয়ান সোয়ানস্টাইগার, ম্যানুয়েল ন্যুয়ের এবং আর্জেন রবেন-এর মতো তারকারা ছিলেন। তাহলে ভারতীয় ফুটবল ঠিক কোথায় পিছিয়ে?
আসলে তফাৎ শুধুমাত্র মানসিকতা এবং পরিকাঠামোয়। সমস্ত বাণিজ্যিক সাহায্য শুধুই ক্রিকেটের জন্য। ফুটবল, হকি সবই এখানে ব্রাত্য। লিয়েন্ডার পেস অথবা মহেশ ভূপতি অনেক লড়াই করে শীর্ষে পৌঁছেছেন। যেহেতু লন টেনিসে প্রাপ্ত পুরস্কার মূল্য অনেক, তাই তারা বিদেশে ট্রেনিং করার সুবিধা পেয়েছেন। আর কোকা কোলার বিজ্ঞাপন করতে না চাওয়া গোপীচন্দ হারিয়ে গেছেন। এই বঞ্চনার কারণেই এই শতকের প্রথম দিক থেকেই হারিয়ে যেতে শুরু করে ভারতীয় ফুটবল। ঘড়োয়া এবং আই লিগের মান তলানিতে ঠেকে। হারিয়ে যায় জেসিটি, মাহিন্দ্রার মতো একগুচ্ছ প্রথম সারির ক্লাব।
আজকের দিনে পর্তুগিজ ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদোর ম্যাঞ্চেস্টার ইউনাইটেডে অথবা আর্জেন্টাইন লিয়োনেল মেসির প্যারি সাঁ জা-য় খেলাটা স্বাবাবিক ব্যাপার। এমনটা না হলে আমরাই হতাশ হব। কিন্তু ভারতীয় ফুটবলে একজন বিদেশি খেলছেন, এ ঘটনা ৫০ বছর আগে কল্পনা করা সম্ভব ছিল না। স্বাধীন ভারতের (১৯৪৭ পরবর্তী সময়ে) মাটিতে খেলা প্রথম বিদেশি ফুটবলার ছিলেন পশ্চিম পাকিস্তানের (বর্তমান পাকিস্তান) তাজ মহম্মদ। ১৯৪৯ সালে ইস্টবেঙ্গলের হয়ে খেলেছিলেন তাজ মহম্মদ। তবে ভারতীয় ফুটবলে বিদেশি হিসেবে প্রথম রাজত্ব শুরু করেন মজিদ বাস্কর এবং জামশেদ নাশিরি। ইরানের এই দুই খেলোয়াড়কে ইস্টবেঙ্গল নিয়ে আসে ’৭০এর দশকের একদম শেষভাগে। তবে দু’জনই প্রায় ৫ বছর মহমেডানে খেলেছেন। মোহনবাগান অন্যদিকে বিদেশি না খেলানোর ধারা বজায় রাখে। ’৯০এর দশকে তাদের প্রথম চমক ছিল চিমা ওকেরি। প্রথমে চিমা অবশ্য মহমেডান এবং ইস্টবেঙ্গলে খেলেছিলেন। আর এই সমস্ত বিদেশিদের পাশে খেলেছেন আমাদের প্রিয় চুনি গোস্বামী, পি কে বন্দ্যোপাধ্যায়, শ্যাম থাপা, সুব্রত ব্যানার্জি, কৃষাণু দে, বাসুদেব মন্ডল, বাইচুং ভুটিয়া, সুনীল ছেত্রি-র মতো খেলোয়াড়রা।
ভারতীয় এবং বিদেশি ফুটবলার, যারা ভারতীয় ফুটবলকে গৌরবান্বিত করেছেন, তাদের নামের তালিকা দীর্ঘ। শিবদাস ভাদুড়ি থেকে বর্তমানের মনবীর সিং, মজিদ বাস্কর থেকে রয় কৃষ্ণা – সবাইকে সম্মান জানিয়েই এই তালিকার মধ্যে প্রবেশ করব না লেখার স্বার্থে। আসলে এই সমস্ত খেলোয়াড়রা আমাদের প্রচুর মুহূর্ত উপহার দিয়েছেন। ভারতীয় ফুটবলকে পৃথিবীর সামনে তুলে ধরেছেন। এশিয়ান কাপে বাঙালি ষষ্ঠী দুলের পাশে খেলেছেন ব্রাজিলিয় ডগলাস, বাইচুংএর পাশে মাইক ওকোরো। সুভাষ ভৌমিকের কোচিংএ ইস্টবেঙ্গল এশিয়ান কাপ জিতেছিল। তেমনই বাঙালি বাসুদেব মন্ডল এবং ব্রাজিলিয় হোসে র্যামিরেস ব্যারেটো মোহনবাগানকে এনে দিয়েছেন জাতীয় লিগ। পরে যার নামকরণ হয় আই লিগ। বাংলায় প্রথম আই লিগ আসে বেলো রাজ্জাকের হেডে এবং মোহনবাগানের হাত ধরে।
তবে, ২০১৪ পরবর্তী সময় থেকে এই চিত্রনাট্যে বদল আসে। শুরু হয় কর্পোরেট আইএসএল। রিলায়েন্স (অম্বানি) সংস্থা আইএমজি-রিলায়েন্স এই বাণিজ্যিক লিগ শুরু করে ২০১৪ সালে। এর ধরন একদমই আইপিএল-এর মতো। অর্থাৎ দেশি-বিদেশি ফুটবলারদের কিনে আদ্যোপান্ত কর্পোরেট মোড়কে ভারতীয় ফুটবলকে সকলের সামনে নিয়ে আসা। প্রথম বছরটি বেশ সুখের কেটেছিল। কারণ ভারতীয় ফুটবলারদের সঙ্গে মাঠে নেমেছিলেন ডেভিড জেমস (ইংল্যান্ড), দাভিদ ত্রেজেগুয়েৎ (ফ্রান্স), আলেহান্দ্রো দেল পিয়েরো এবং আলেহান্দ্রো নেস্তা-র (ইতালি) মতো আন্তর্জাতিক তারকারা। পরবর্তীতে এই লিগে খেলেন ব্লেঁই মাতুইদি (ফ্রান্স) এবং দিয়েগো ফোরলান-এর (উরুগুয়ে) মতো আন্তর্জাতিক তারকারা।
এরপর থেকেই শুরু হয় কর্পোরেট দখলদারি। অর্থাৎ ঠিক সেই পন্থা যা আইপিএল নিয়েছিল। আইএসএল-এরও মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়ায় শত্রুর বিনাশ। আইপিএল আইসিএল-কে মুছে ফেলে ভারতের একমাত্র টি-টোয়েন্টি লিগ হয়েছিল। এবং আইএসএল-কে দেশের একমাত্র লিগ হতে হলে মুছে ফেলতে হবে আই লিগ-কে। শুরু হয়ে যায় আলোচনা। আই লিগ বিজয়ী দল সরাসরি এএফসি কাপ (এশিয়ান ফুটবল কনফেড্রেশন ক্লাব ফুটবল, যা অনেকাংশেই ইউয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগের সমতুল্য) খেলার যোগ্যতা অর্জন করে। যে সম্মান ২০১৫ এবং ২০২০ সালে মোহনবাগান পেয়েছে। আইএসএল যদি এই জায়গা পায়, তাহলে আইএসএল জয়ী ক্লাব এএফসি কাপ খেলতে পারবে।
আর তাই, ভারতে অনুষ্ঠিত ২০১৭ যুব (অনূর্ধ্ব ১৭) বিশকাপের পর শুরু হয় সুচারু পরিকল্পনা। ফিফার অনুমোদন থেকে শুরু করে দেশীয় ক্লাবগুলোকে শেষ করে দেওয়ার যাত্রা। ব্যবসাদারি রাজনীতির মাধ্যমে আই লিগ-কে সরিয়ে দেশের একমাত্র লিগ হওয়ার অনুমোদন যোগাড় করে নেয় আইএসএল। অর্থাৎ, আইএসএল জিতলে তবেই এএফসি কাপ খেলা যাবে। আই লিগকে ঠেলে দেওয়া হয় পিছনের সারিতে। যার ফলে এক চরম দুর্দিনের মুখোমুখি হয় বাঙালির ফুটবল।
করোনা অতিমারির কারণেই ২০২০ এএফসি কাপ স্থগিত রাখা হয়। ততদিনে আপামর বাঙালি জেনে গেছে, আইএসএল না খেললে ইস্টবেঙ্গল – মোহনবাগানের মতো শতাব্দী প্রাচীন ক্লাবের আর কোনও ভবিষ্যৎ নেই। শুরু হয় জল্পনা। যে কোনও ইস্ট-মোহন ম্যাচেই দর্শক সংখ্যা এক লক্ষ পার করে ফেলতে সক্ষম। অথচ আইএসএল-এ দর্শক সংখ্যা মেরেকেটে ১০-২০ হাজার। অর্থাৎ, একটাই মাস্টার প্ল্যান। এই দু’টো ক্লাবকে আইএসএল-এ প্রয়োজন।
কিন্তু কিভাবে? প্রথমেই বিভিন্নভাবে এই দু’টি ক্লাবকে পঙ্গু করে দেওয়া হল। দলগঠনের জন্য নূন্যতম অর্থ অথবা স্পনসর – ইস্টবেঙ্গল – মোহনবাগান কিছুই পেল না। টিকে থাকার জন্য মোহনবাগান বাধ্য হয়ে গাঁটছড়া বাধঁল এটিকে-র সঙ্গে। আর সরকারিভাবে ইস্টবেঙ্গলকে জুড়ে দেওয়া হল শ্রী সিমেন্টের সঙ্গে। অতিমারির কারণে স্টেডিয়াম দর্শকশূন্য থাকলেও, গতবছর এই দুই ক্লাবের ডার্বির দিন টিআরপি আসমান ছুঁল। অর্থাৎ দখল করে নেওয়া হল দু’টি স্বত্ত্বা।
লেখার অন্তিমভাগে স্পষ্ট করে দিতে চাই যে আমি কট্টর মোহনবাগানি। কিন্তু এই ইস্টবেঙ্গল ছাড়া, এই ডার্বি ছাড়া আমি অসম্পূর্ণ। ডার্বি জেতার আনন্দ হয়ত বিশ্বকাপ জেতার থেকেও বেশি। আর এভাবেই নিজস্ব স্বত্তা হারিয়েছে আমাদের মোহনবাগান – ইস্টবেঙ্গল। বাণিজ্যিক দখলের মুখে আক্রান্ত। ২০২০ আই লিগ বিজয়ী মোহনবাগান এখন এএফসি কাপ খেলছে এটিকে-র বদান্যতায়। আর আমরা দিন গুনছি, এই দখলের আঙিনার বাইরে মুখোমুখি হওয়ার – ইস্টবেঙ্গল বনাম মোহনবাগান।