(নির্জলা সত্যি ঘটনা অবলম্বনে)
“মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন যে ভেতরে ভেতরে শিল্প হয়ে গেছে। তাঁর আমলেই বাংলা শিক্ষা, শিল্প, সংস্কৃতিতে যেভাবে এগিয়েছে সেভাবে কোনওদিন এগোতে পারেনি, আগামী একশো বছরেও পারবে না! আসন্ন দুর্গাপুজো উপলক্ষ্যে মুখ্যমন্ত্রী একটি স্বরচিত কবিতাও আবৃত্তি করে প্রতিটি পুজোর উদ্যোক্তা ও ক্লাবগুলিকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। বাংলার সংস্কৃতিতে তাদের অবদানের জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।
এবার চলুন আমাদের প্রতিনিধির থেকে জেনে নিই চাকরি সংক্রান্ত দুর্নীতি নিয়ে কি বলছেন আন্দোলনকারীরা…“
সাতসকালে ঘুমটা ভাঙাল টাবলু। পটা ঘুমচোখে ফোন দেখে অবাক হয়েই ধরল। টাবলুরও ঘুম ঘুম গলা,”ভাই আমাদের এক দাদু টপকে গেছে।” ঘুমের মধ্যেও পটা টাবলুর সম্মানপ্রদর্শন ও শব্দচয়ন নিয়ে না ভেবে পারল না! সে ভাবছিল টাবলুর দাদুর টপকে যাওয়ার জন্য সাতসকালে ফোনটা না করলেই নয়? কিন্তু ভাবনাটা পাকবার আগেই টাবলু ফের বলল,”ভন্তাদা যেতে বলেছে সবাইকে।” এবার পটা টাবলুকে ঘুম ভাঙানোর জন্য আর দায়ী করল না। এ দাদু টাবলুর দাদু নয় তবে। এ পার্টির কেউ। মনে মনে খিস্তি দিল বুড়োটাকে। শালা মরার আর দিন পেল না, ঠিক বিশ্বকর্মা পুজোর পরদিনটাই বেছে নিতে হল?
কোনওমতে চা খেয়ে একটা গেঞ্জি গলিয়ে ক্লাবে এসে দেখল অনেকেই চলে এসেছে। স্বয়ং ভন্তাদা পান্তুয়ার মতো মুখ করে বসে আছে। কারওরই ঘুমখানা পুরো হয়নি। নজর চালিয়ে দেখল ক’জন এখনও ঢুলছে, তবে সেটা ঘুমের জন্য না গতরাতের উৎসবের জন্য তা ঠাহর করা গেল না। ভন্তাদা কিন্তু দিব্যি ফিটফাট, মুখটা দেখলে মনে এই গঙ্গায় ডুব দিয়ে এল (নেতা হতে হলে এমনই হয় বলে পটার ধারণা)। পটা ঢুকতেই বোধহয় ভন্তাদা নড়চড়ে বসল। ক্লাবের আনঅফিশিয়াল কেয়ারটেকার সুমন্ত চায়ের দোকানের ছেলেটাকে নিয়ে ঢুকল। পরিবেশ রেডি দেখে ভন্তাদা এবার গলা খাঁকরে শুরু করল,”ভাইসব (এভাবেই বলতে হয়), গতকাল আমাদের দলের এক বর্-বর্-ইয়ে বস্সীয়ান ইয়ে মানে বয়স্ক এক সদস্যের অকালপ্রয়াণ (যাক এটা একেবারে বলেছে!) হয়েছে। তাই আজ আমাদের কালো দিন (কারও কারও তো দিন শুরুই হয়নি)। আজ এখানে একটা শোকসভা করা হবে। তারপর মিছিল করে তাঁর বাড়ি গিয়ে আমরা অভিনন্দন ইয়ে… মানে ওইটা কি হবে রে? (সুমন্ত বলে দিল “না না অভিনন্দন নয় দাদা, শোকপ্রকাশ।”) হ্যাঁ শোকপ্রকাশ করে আসব।” বলেই ভন্তাদা পকেট থেকে রুমাল বের করে ঘাম মুছতে লাগল। পটা মনে মনে বলল “ইয়ে মারাও সব।”
পটার দুঃখ হচ্ছিল। না কারও মৃত্যুতে নয়, নেতা হতে গেলে কত কসরত করতে হয় তাই ভেবে। মনে পড়ে গেল বেচারা ভন্তাদার অবস্থা টাইট, তার উপরের দাদা আপাতত দুর্নীতিকেসে ফেঁসে গেছে। আগামী পুরভোটের টিকিটটা নাও হতে পারে। সুমন্ত ভন্তাদার অবস্থা দেখেই এবার নিজে শুরু করল “ভাইসব (ভন্তাদা কটমট করে তাকিয়েছে)…না মানে দাদাসব এখন ফুলের মালা কিনে এনে ক’জন আগে আগে ওনার বাড়ি চলে যাবে। তারপর ঘোঁতনদা আর আমরা যারা যারা ক্লাবে আছি যাব। ঘোঁতনদার বাড়িতে কেউ একজন গিয়ে একটু তাড়া দিয়ে এসো। কাল অনেকরাতে লাইভে ঘোঁতনদা ব্যথাঞ্জলি থেকে কবিতা পড়ছিলেন; বোধহয় এখনও ঘুম ভাঙেনি!” ঘোঁতনদাই এই অঞ্চলের সবচাইতে বড়ো দাদা, তাঁর নামেই নীলষষ্ঠী থেকে কালী, শীতলা থেকে গণেশ সব পুজো চলে। সুমন্তের কথা শুনে কয়েকজন তড়বড় করে উঠে দৌড় দিল। সকাল সকাল এমন সুযোগ কেউ ছাড়তে চায় না। ঘোঁতনদার গুডবুকে উঠলেই চেষ্টা না করেও জনগণের সেবার জন্য প্রোমোটারি কি জমির দালালিতে রাতারাতি জায়গা করে ফেলা যায়।
এসব ছুটকো কাজে পটার মন নেই। দেখা গেল টাবলুও এমন ওঁচা কাজে পা গলায়নি। তার চেয়ে ভন্তাদার দিকেই মন দেওয়া আপাতত সুবিধেজনক। ভন্তাদা যতদিন না তার দাদা ছাড়া পাচ্ছে, বড়োই উদাস। ফুল আনতে সুমন্তকে হাজার দুয়েক টাকার নোট বের করে দিল। সুমন্ত এদিক-ওদিক দেখে পটাকেই দু’টো পাঁচশোর নোট ধরিয়ে দিল। তাই সই! টাবলুও গাড়ির চাবিটা আঙুলে ঘোরাতে ঘোরাতে পটার পেছন পেছন বের হয়ে এল। টাবলুকে দরকার তো হবেই কারণ পটার গাড়ি নেই। যা একটি আশ্চর্যের বিষয়, কারণ কিছুদিন ভন্তাদার আন্ডারে থাকলে চারচাকা না হলেও দু’চাকা হয়েই যায়। পটার সমস্যা হল সে দু’চাকা চালাতে পারে না, চায়ও না। টাবলুকে সে বলেছে পরের ভোটের আগেই একখানা সেকেন্ডহ্যান্ড চারচাকা সে কিনে ফেলতে পারবে। টাবলুর আবার দু’চাকাতেই মন মজে থাকে।
টাবলু সোজা রসিকজন ধাবার সামনে বাইক থামাল। পটা মৃদু প্রতিবাদ করতে গেল একবার, অনিচ্ছা নিয়েই “ফুলটা তো নিতে হবে…” টাবলু হাত নাড়িয়েই কথাটা উড়িয়ে দিল। “রাখ তো ওই তো ক’টা ফুল তার জন্য আবার। আয় গলাটা ভিজিয়ে নে। ভন্তাদা শো’র জন্য রেডি দেখছিস না? সারাদিন ধকল যাবে। ফুল যাওয়ার সময় খ্যাঁদার দোকান থেকে তুলে নেব আবার কি? পয়সা লাগবে না।” গতবছর টাবলুর উমেদারিতেই ঘোঁতনদা খ্যাঁদার বোনকে একটা স্কুলে ঢুকিয়ে দিয়েছে। পরীক্ষা টরীক্ষা দিতে হয়নি অবশ্যই। ঘোঁতনদা চেনা লোক বলেই কিছু কমে-সমেই চাকরি করে দিয়েছেন। তারপর থেকেই খ্যাঁদা টাবলুর পায়ের তলায় চটিজুতো হয়ে আছে।
বিয়ারটাতে চুমুক দিতেই সুমন্তর ফোন “কোথায় বাওয়া তোমরা? ঘোঁতনদা রওনা হয়ে গেছে তাড়াতাড়ি করো।” টাবলু একটা খিস্তি দিয়েই চোঁ করে গলায় সবটা ঢেলেই পটাকে প্রায় উড়িয়ে খ্যাঁদার দোকানে ছুটল। ভন্তাদাকে তাপ্পি দিলেও ঘোঁতনদাকে চটানোর সাহস কারও নেই। ফুল নিয়ে ক্লাবে ঢুকতেই দেখল জনসংখ্যা বেড়ে গেছে। ঘোঁতনদা এসেছেন শুনেই আশেপাশের দোকানদার আর দু’চারটে বাজে লোকজন ভিড় করেছে। ঘোঁতনদা অবশ্য হাসি হাসি মুখ করে ভন্তাদার পাশে বসে আছে। চোখ দু’টো লাল হয়ে আছে। বোধহয় রাত জেগে ফেসবুক লাইভে কবিতা পড়ার জন্য! ভন্তাদার রুমালটা আর কাজে দিচ্ছে না, তোয়ালে দরকার হত বলে পটার মনে হল। কে না জানে ভন্তাদার দাদা আর ঘোঁতনদার মধ্যে আকচা-আকচি আছে। নিন্দুকে বলে ঘোঁতনদাই নাকি পাওনা ঠিকঠাক না পেয়ে সুপ্রিমোর কাছে লাগিয়েছিলেন। আর উনি এসব মোটেই পছন্দ করেন না, উনি শিল্পী মানুষ। সাধারণ মানুষের ভালোর জন্যেই রাজনীতি করেন। তাঁর দলে সবাই সব সমান সমান পাবে, একজন বেশি একজন কম এসব তিনি বরদাস্ত করেন না। তাই ক’দিনের শাস্তি হিসেবেই হাজতবাস। ঘোঁতনদার সবদিকেই সোনায় সোহাগা, পরের ভোটেও জায়গা পাকা হয়ে গেল।
পটাদের ফুল হাতে এগোতে দেখে জনতার মধ্যে চাপা গুঞ্জন শুরু হল। পটা স্পষ্টই শুনল কেউ বলছে,”কাল সারারাত করেও শখ মেটেনি আজ ফের সকাল সকাল প্রোগ্রাম?” পাশ থেকে কেউ ফুট কাটল,”বিশ্বকর্মা পুজোর জন্যেও ফান্ড চারদিনের দেয় নাকি বে?” কে মৃদু ধমক দিল,”অ্যাই! এসব বাজে কথা না। পার্টির লোক মারা গেছে। শোকসভা হবে।” ঘোঁতনদা ঢুলু ঢুলু চোখে তাকাচ্ছিলেন, ফুল এসে গেছে দেখে ভন্তাদাকে বললেন,”এবার তবে শুরু করা যাক নাকি?” ভন্তাদা রেডিই থাকে সবসময়। তড়াক করে লাফিয়ে উঠে শুরু করে দিল,”বন্ধুগণ আজ আমাদের বড়োই শোকের দিন। আমাদের দলের এক প্রবীণ সদস্য শ্রী হরেকৃষ্ণ কাঞ্জিলাল কাল আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন।” (ভিড়ের মধ্যে কে একটা বলল,”ওই ঢ্যামনা বুড়োটার জন্য এতক্ষণ দাঁড় করিয়ে রাখল রে!”) ঘোঁতনদা একবার সেদিকে চাইতেই অবশ্য আর কিছু শোনা গেল না। ভন্তাদা কন্টিনিউ করে যাচ্ছে,”এই দুঃখজনক ঘটনাতে আমরা এখানে শোকসভার আয়োজন করেছি। আপনাদের সাদর আমন্ত্রণ…ইয়ে মানে আপনাদের অনুরোধ জানাই যোগদান করতে।”
জনতার মধ্যে কোনও চাঞ্চল্য দেখা গেল না। পটা শুনল একজন ফিসফিস করে বলছে,”হারামি হরেকৃষ্ণ ভোটের আগে আগে বাড়িতে বোম ফেলাত। আগের দল উল্টোতেই এদের সাথে জুটে দু’হাতে লুটেছে। তার জন্যে নাকি শোকসভা!” দলের একটা বাচ্চা ছেলে পাশেরজনকে জিজ্ঞাসা করছে,”এই মালটা কে রে? নামই শুনিনি!” টাবলু চাপাগলায় বলল,”এই তুই দলে কবে এসেছিস এসব জানবি? পোঁদপাকা চ্যাংড়া সব!” ছেলেটা কাঁচুমাচু মুখে উত্তর করল,”কিঁ কঁরে জাঁনব? ভুঁল হঁয়ে গেঁছে!” আরেকটা চালাক চালাক ছেলে (ঘোঁতনদার কাছে কাছে থেকে সামনের মোড়েই একটা বিরাট বাইকের শোরুম খুলে ফেলেছে। সেখানে দিদিমণির সঙ্গে ঘোঁতনদার ছবিও ঝুলিয়ে রাখে) ফস্ করে বলে ফেলল,”এ বুড়ো আগে অন্য দলে ছিল না? পরে এসেছে আমাদের দলে। বাবা বলত তো আমি জানি!” পটা প্রমাদ গুনল, এসব কথা ঘোঁতনদার কানে উঠলে আর পুজোয়, জনসেবায় সুযোগ মিলবে না। সময় বুঝেই সুমন্ত চেঁচিয়ে উঠল,”এই এই চুপ। এখন দু’মিনিট নীরবতা পালন হবে।” পটার কষে ঘুম পাচ্ছিল, আড়চোখে তাকিয়ে দেখল টাবলু দিব্যি নীরবতা পালন করছে চোখ বুজে, ব্যাটার দম আছে। নীরবতা শেষ হতে দেখল ভিড়টা পাতলা হয়ে এসেছে অনেকটাই। মজা দেখতে না পেলে লোকে থাকবেই বা কেন? ঘোঁতনদাকে দেখে মনে হচ্ছে বড়োই কষ্ট পেয়েছেন। ভন্তাদাকে নির্দেশ দিলেন,”ছেলেপুলেদের আসতে বল। ঠিকঠাক মিছিল না হলে মার্কস কাটা যাবে তো!” ভন্তাদাও সবার আক্কেল দেখে বিরক্ত। সুমন্তকেই ধমকে দিল,”অ্যাই তোদের সব ছেলেরা কই? একজন মারা গেছে তোদের তাও আসতে এত দেরি হয়?” সুমন্ত এসব ঝাড় খেয়ে অভ্যস্ত। ঝাড় খেয়েই ও মিউনিসিপ্যালিটিতে চাকরি আর তিনতলা বাড়ি করে ফেলেছে। আর ক’বছর টিকে থাকলে আরও চারটে ওরম বাড়ি হয়ে যাবে। সুমন্ত অন্যদের ফোনাফুনি করে ডেকে আনতে বলছে। টাবলু দাঁত বের করে ঘোঁতনদাকে কি বলবে বলে এগিয়ে গেল, পটাও পেছন ধরল। মুখটা চিনিয়ে রাখলে ক’টা ছবি ফেসবুকে দিয়ে রাখলেই জলের মতো সব সহজ হয়ে যায়।
ঘন্টাখানেকের মধ্যেই ক্লাবঘরে দলের ছেলেদের ছোটোখাটো ভিড় হয়ে গেছে। ভন্তাদা আরও নার্ভাস। ঘোঁতনদা মোটামুটি খুশি। নিজেই মাইক, বক্স বের করতে নির্দেশ দিচ্ছে। চার পাঁচজন মিলে ক’টা ফ্লেক্স খাড়া করে ফেলেছে টেনেটুনে। ভোটের সময় এগুলো বানানো হয় প্রতিবছরই। ক’জনের ভোটের খাটনির খরচও এসব থেকেই উঠে যায় (খাটনি তো কম নয়!)। পটাকেও ধরিয়ে দেওয়া হয়েছে একখানা, বেছে বেছে ও দিদিমণির ছবিওলা একখানাই নিয়েছে। সুমন্ত মাইকিং করবে, টাবলু ডিজে বক্সের দায়িত্বে। মিছিল করে হরেকৃষ্ণবাবুর বাড়ি যাওয়া হবে। শোকপ্রকাশ করে ছবি তুলে ফেসবুকে লাইভে দেখানো হবে। ক’জন ছেলে মোবাইল হাতে গোটাটা কভার করার জন্য নিজেদের মধ্যে আলোচনা করে নিচ্ছে। ঘোঁতনদা সিগন্যাল দিতেই ডিজে বক্স টোটোতে চাপিয়ে দেওয়া হল। এবার ঘোঁতনদা, ভন্তাদা আর ক্লাবের ক’জন চেনা মুখ যারা টিকিটের জন্য চেষ্টা চালাচ্ছে সামনে এগিয়ে গেল। মোবাইল হাতে ছেলেরা, ফ্লেক্স, ব্যানার হাতে পটারাও এগোল। ডিজে বক্স গাঁক গাঁক করে উঠল, সুমন্ত মাইক হাতে চেঁচাচ্ছে,”আজ আমাদের পরমপ্রিয় হরেকৃষ্ণ কাঞ্জিলাল আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন। তাঁর আত্মার শান্তি কামনায় আমাদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন আমাদের ধানহাটির সকলের দাদা শ্রী ঘোঁতন মিত্র মহাশয়। আমাদের পূজ্য দিদিমণির অনুপ্রেরণায় আমরা শোকযাত্রা করে…”
আচমকা দুপুরের ঘুম ভেঙে পাড়ার লোকে প্রথমে বুঝে উঠতে পারল না এ কিসের মিছিল। কালই বিশ্বকর্মা পুজো শেষ হয়েছে, কেউ কেউ ভাবল সেটারই দ্বিতীয় অংশ। কেউ আবার উৎসাহ নিয়ে নিউজ চ্যানেল খুলে দেখতে গেল ফের দুর্নীতির দায়ে কেউ জেলে গেল কিনা! উল্টোদিকের বাড়ির একটি ছেলে ফোনে কথা বলছিল। ডিজে বক্সে গত ভোটে শাসকদলের ভাইরাল গানখানা বেজে উঠতেই নারীকন্ঠটি খিলখিলিয়ে হেসে জিজ্ঞাসা করল,”তোমাদের ওখানে কি রোজ কিছু না কিছু হয়? আজ কিসের ক্যাম্পেনিং?” ছেলেটি বিরক্ত হয়ে ব্যঙ্গমিশ্রিত স্বরে উত্তর দিল,”কেন শুনতে পাচ্ছ না? দিদিমণির অনুপ্রেরণায় শোকপ্রকাশের ধুম!”
ডিজে বক্স তখন হরেকৃষ্ণ কাঞ্জিলালের পরলোকগমনের শোকে বাজছে, “দিদিমণির হাত ধরে উন্নয়ন ঘরে ঘরে…” শোকযাত্রা এগিয়ে চলল।

কবি
জন্ম: ১৯৯৫ সালের ১০ আগস্ট আলিপুরদুয়ারের বীরপাড়ায়। ইংরেজি সাহিত্যে স্নাতকোত্তর। কলেজজীবন থেকেই লেখালেখিতে হাতেখড়ি। বর্তমানে তিনি পেশার সূত্রে কলকাতা নিবাসী।