
১ একবার লোমশ এই পৃষ্ঠভূমি দেখে নিতে চাই অনেকান্ত হওয়ার আগেই সদ্যজাগা জন্তুদের হয়ে আমাকেও সাবধান করেছ তুমি বাহ্যত আকাশ আজ এতটা ঝুঁকেছে, ভয়ে কুঁকড়ে ওঠে এমনকি বাতাসের প্রভু তোমার ভাইয়ের লাশ খুঁজতে খুঁজতে রাস্তা হারিয়েছো, দিশাহীন অন্ধরাস্তা আমারও ভেতরে ঢুকে গেছে, হে অন্ধের পরিত্রাতা, যিনি অন্ধজনে দেহ আলো গাইছিলেন, তাঁর পারলৌকিকের পাশে অনেকান্ত চিৎকার উঠেছে, অন্ধত্বের স্তনস্পর্শে এতদূর শিহরিত আমি অন্ধের দেহটি হাতড়াই, অন্ধের দেহযন্ত্র, গো আর্তের পরিত্রাতা, লেখ্যাতীত হাইফেন কমায় ঢুকে যায় ২ এই যে আমিও অনেকান্ত হই আর নিজের সছিদ্র টুকরো নিজে ধরে রাখি আর প্রতিটি টুকরোর মধ্যে শলাকা বিঁধিয়ে দেখি কতটা গভীর ছিল ক্ষত এভাবেই কাল মায়াপরবশ হয়ে অতিরিক্ত কালসীমা লঙ্ঘন করেছে, তুমি দূরদেশকালে গিয়ে কতিপয় গ্রন্থি ছুঁয়ে প্রশান্ত করেছ মূলাধার বুনোচাঁদ অসময় সময় ভুলেছে তব নীলমনি ছাঁচ দেখে, এই যে আমার বায়ুভুখ ছুঁচ হয়ে ছুরি হয়ে বৈদ্যের সাঁড়াশি হয়ে গলায় বিঁধেছে, ওগো, প্রতি বুধবার অনেকান্ত হয়ে ওঠে লহুদেরও চন্দ্র-পারাপার ৩ তরল আগুন। পাশে উবু হয়ে আছি রাত্রির উপরিতলে বুনোদের লোম ওড়ে তোমাকে ওমের চেয়ে বেশি মনে হয় পেট্রোলের দাহ্য নিয়ে যে রাস্তা সমুদ্রে নামে সেও নীল ফসফরাসে জ্বলেছিল, যত ভ্রান্তিময় শব্দ আমি জ্বালিয়ে মাথায় এ-ঘর ও-ঘর করি। যে নাদসমুদ্রে দেবী সাঁতার কাটেন, তারও কূল নাই। অকূল তোমাকে শব্দের কঙ্কালে রেখে অর্থাতীত লুকিয়েছে সেপিয়া রঙের ভাষা, সে ভাষার অশরীরে দ্যুতিরা ঠিকরোয়, দ্যুতি চতুর্থ মাত্রায় এসে ঠিকরে উঠেছিল ৪ আমার প্রস্তাব পোড়ে তামার তাওয়ায়। আদিম প্রাণীটি হয়ে দেখি এই আদিগন্ত রক্তবর্ণহীন। এত যে অমৃত কাল, তারও মুখ লাল, দগদগে। অগাধ তুমি, একদা প্রবাসী কবুতর, উড়ে উড়ে বসেছিলে এ-ডালে ও-ডালে। আমার শরীর ছুঁলে, তুমিই জগন্ময় আলো। যদিও সেসব স্বপ্নকল্পকথা, স্বপ্ন অন্তর্ঘাতে জড়িয়ে ধরেছে। তদুপরি শহরের অস্থি পোড়ে ভিতর শহরে ততোধিক অন্তর্মূলে ঘুমিয়েছে স্রোত। হেতু ভাষাই আশ্রয়। ভাষা অমৃতপ্রীতম, লেখে ঘুমায়ো না। লেখে, তুষার বৃষ্টির নীচে গলে যাওয়া ভালো ৫ শয়তান এ পীড়িতকে শয়তানের ছোট ভাই ভাবে ঈশ্বর ভাবেন তাঁর বেহুদা শয়তান বিষাদসিন্ধুর জলে বিষাদ চোবায় নিশিকালে নিশিকাল লুডু খেলে একা একা প্রচন্ড জ্যোৎস্নায় এক হস্তে লীলা পদ্ম অন্য হাতে শঙ্খ ঘোষ, তুমি চতুরঙ্গের ম্যাজিক কী দক্ষে দেখাও ম্যাজিক বিভিন্ন আলো ফেলেছিল যেখানে যেখানে সেখানে সেখানে দানা খুঁটে খায় হাইব্রিড পক্ষীরা সব পক্ষীই মায়া মায়া-মেঘ ঘনাইলে কাটা ঘুড়ি হয়ে নামে জরুরি ঘোষণা: শব্দ খেলা বন্ধ করো না তো সিঁড়ি ওপরে ওঠাব শয়তানের অনুচর কালাগ্নি জ্বালায় নীচুদেশে অক্ষিমুল খাক হয় পরন্ত নাভির জল জীবিত ও মৃতদের পাশেপাশে ঘোরে জ্যান্ত ভ্রুন হয়ে তুমি লীলাপদ্মে, শঙ্খ ঘোষে ফোটো, কহো, জীবিতের মহারাষ্ট্রে এলোচুল কেমনে বিছাও? এলোচুল মহারাষ্ট্রে কেমনে ওড়ায় জীবিতেরা.. ৬ গোলাপ বাগানে ঢুকে দেবতার রেতঃপাত হলে গোলাপ সুন্দরী বলে, সে বড় লজ্জার, কথামৃত পান করে কিছুটা টলমল আমি বিভ্রান্তিতে ঢুকি। বিভ্রান্তির মূল যেহেতু অতলে কালাগ্নির আঁচ লাগে দেহে, দেহান্তরে মৃত কবিদের বাড়ি তাড়িত জেগেছে, গ্রহে আচ্ছে দিন ফুকারিয়া কহে, তব সম্মুখে বিপদ বিপর্যয় ফুকারিয়া কহে, রাস্তায় দাঁড়াবেন না উপরিতলের, ওগো, বাস্তবতা, তুমি যদি মায়াময় হও এলিজিরা অসহায় কবিদের নাভির ভিতর কিছুটা জিরোয়, স্বপ্নে দেখে নিতে পারে কালাগ্নি ভরেছে কুঁজে উট, এই নিশীথ সমীরে ক্ষুধার্তের রাইনোসর জ্যোৎস্না চেটে নেয়

বিজয় সিংহ জন্ম জামশেদপুরে। নাটক গান অক্ষরের পারিবারিক জগতে বেড়ে ওঠা। এ পর্যন্ত মোট আটটি কাব্যগ্রন্থ প্রকাশিত । সম্প্রতি বেরিয়েছে নির্বাচিত কবিতা। পেশা অধ্যাপনা। পড়িয়েছেন সেবাভারতী মহাবিদ্যালয়, শ্রীচৈতন্য কলেজ, সাউথ সিটি কলেজে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় অতিথি অধ্যাপক হিসেবে কাজ করেছেন। গবেষণা করেছেন সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের কবিতা নিয়ে। সেইটি পরে ' সুভাষ মুখোপাধ্যায় পদাতিক কবি রক্তিম কবিতা' এই নামে প্রকাশিত হয়। পেয়েছেন বীরেন্দ্র পুরস্কার, অমিতেশ মাইতি স্মৃতি পুরস্কার, কুমুদ রঞ্জন মল্লিক সম্মাননা ইত্যাদি
Facebook Comments Box
