
ওহ নন্দলাল গাছকে শুয়োর বলছো নদীকে শুয়োর বলছো হাওয়াকেও একই নাম... এবং সুন্দরটাও ধূসর। নীল ক্যানভাসগুলোর সবখানে শূকরের নাম... হৃদয় ঘোঁতঘোঁত করে গানগুলো গর্জন করে। ভালোবাসায় নগ্নচোর... পরবাসে বুঁদ নগ্নধ্বনি সম্বন্ধবাদে হিহি বরাহ কেঁচোরাও খুব গর্জায়... ওহ কলঙ্কায়ন লূতাতন্তুবৎ হৃদয়ে কলঙ্ক পরমানন্দে ধপা-ধপ বিষ ছিছিছিছি বলে যায় নদী... পাখির মুখমণ্ডলে কলঙ্ক আঁধার নেমেছে রুটিতে ধেইধেই নৃত্যের অন্তঃস্থা... অবিবাহিত বসে কাঁদছে পুদিনা গন্ধগুলো জ্বলছে সরষে দানাগুলো পুড়ছে... কলঙ্কে ভাসছে অন্তরতি কলঙ্কে সুচিত্রা উন্মাদিনী বৃষ্টিকে ভস্ম হতে দেখছি... ওহ নিরীক্ষায়ন অভূতপূর্ব নির্মিত গাছ অথচ সে গাছে কোনো পাখিকে দেখ না। চাঁদে কেবল অন্তর্লীন দৈত্য... সূর্য আঁকা ক্যানভাসে নুড মেয়েদের যোনিরা ডুবিছে দুরন্ত আঁধারে পেইন্টার কেন কাঁদছে... গাছটি খুবই নিরীক্ষার ছায়াবাস নেই কোথাও বাগানে রাশিরাশি নগ্ন রাই নেই শৃঙ্গারও নেই... ওহ যৌনমঙ্গলা নিভৃতে না পেলে যৌনতা রসে পোক্ত হয় না হৃদিম যৌনতা মাত্র যখন কাঁদে যৌন বিচ্ছিন্নতায়, সুন্দর ফ্রেশ ফলমূল ধরে থাক। বসন্ত বাতাসে আঁকা পিউ আনন্দে এবিসিডি কখগঘ কাব্য লক্ষণগুলো যৌনতা পেয়ে যৌনমঙ্গলা হয়েছে মৃত্তিকায় মিশে মত্ত নাচো। চুপিচুপি তোমাতে এসেছি চুপিচুপি আমায় এসেছো। ওহ চন্দ্রিমাতা আমরা চাঁদের নিচে গাই আমরা চাঁদের নিচে খাই। যদি তুমি জাগাও মৌনতা তালে আমি পাই যৌনতা। মনের ভিতরে শুয়ে থাকা জলময় দেশ আঁকাবাঁকা। সুর পেলে নেচে ওঠে নদী তথায় সহে না আর 'যদি'। পাখিরা নিরন্তর খুব হাসে আমায় কথক ভেবে ঘাসে। চাঁদের মতোন সব ভাবনা রক্তেমাংসে খাক জাবনা। ওহ পরময়ী বরিষণ তো দিয়েছো প্রিয় সাইকেলও দাও একখানি অথবা দিও অক্ষয় নৌকো জলে জাদু করিব নির্মাণি। মূর্ত আর বিমূর্তর খেলায় তোমার ভাবকুলে নেচেছি বনভূমি পর্বতমালা জলে তোমার দেহমনে গেয়েছি। গাছ দিয়ে ঢাকি কংক্রিট আলো জ্বেলে ঢাকি কান্না আসলে তুমি যে ঠিক কী সহে না তোমার সব রান্না।

অলোক বিশ্বাস বাংলা ভাষার আটের দশকের প্রতিনিধিস্থানীয় কবি ও গদ্যকার। জন্ম , ৪ঠা নভেম্বর ১৯৫৯ সাল, পশ্চিমবঙ্গের হাওড়া জেলার ক্ষুদ্রশিল্প শহর সালকিয়ায়, গঙ্গার পশ্চিম পাড়ে। প্রথম কবিতার বই : নীল আয়না। প্রকাশিত হয় ১৯৮৯ সালে। এরপর থেকে একের পর এক কবিতার বই। যেমন, মাকড়সার জাল। রূপসা পিয়ানো। হিমজার্সি। ভাইরাস ব্যালঘর। শ্রীরূপিনী ডটকম। বাংলার মুখ। আরঙ রসিয়া। অতনুর নামগন্ধ। কলাকার স্ট্রিট। অণুকবিতাগুচ্ছ। কাকে বলে আমার দেশ। গল্পের বই : দূরভাষ কলোনি। অজস্র গল্প অগ্রন্থিত হয়ে আছে। বিভিন্ন সংকলন সম্পাদনা করেছেন, যেমন, সত্তর দশকের কবিদের কবিতা নিয়ে : ক্যানভাস সত্তর। আটের দশকের কবিদের নিয়ে দীর্ঘ কবিতা সংকলন : আমাদের কবিতা। আট দশকের কবিদের কবিতা। বাংলাদেশের আশির দশকের কবিদের কবিতা। গল্পের সংকলন : গল্পের ক্যানভাস। প্রকাশিত হয়েছে কবিতা সমগ্র। ১৯৯১ সাল থেকে সম্পাদনা ক'রে আসছেন কবিতা ক্যাম্পাস পত্রিকা। এ পর্যন্ত ৯৩ টি সংখ্যা প্রকাশিত হয়েছে কবিতা ক্যাম্পাস পত্রিকার। আটের দশকের শুরুতে কিছুদিন সম্পাদনা করেছেন 'কার্তুজ' নামে একটি পত্রিকা। সম্মান পুরস্কার পেয়েছেন রাজশাহীর কবিকুঞ্জের দ্বারা, রাজশাহীর চিহ্নমেলায় এবং পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়। ২০১৩ সালে বাংলাদেশে বগুড়া লেখক চক্রের সম্মান। 'কবিতাপাক্ষিক' সম্মান। 'আই-ফেস্ট' সম্মান। 'প্ৰতিকথা' পত্রিকা সম্মান। ধান্যকুড়িয়া সাধারণ পাঠাগার সম্মান ইত্যাদি।
Facebook Comments Box
