
বাঁশের অঙ্ক
একটা বেড়াল থাবা খুঁজে পাচ্ছে না পতাকার খুঁটিতে বাঁদর বসেআছে
বস্তুত তার কোনও মাটি নেই
তামাশা শেষে ফিরে গেছে লোকজন
খুঁটি বেয়ে বাঁদর উঠছে নামছে
সে জানে তার কোনও মাটি নেই
রগড় দেখতে দাঁড়িয়ে পড়ছে লোকজন পতাকা আব্রু ঢাকতে পারছে না বাঁদরের
ভাগাড়
আপাততো ছুরির কথা থাক। ভাত তোলার
সময় হলো। ছুরি ও আমার বিচোবীচ এক
গুপ্তরোগ আমায় পরখ করছে। সংখ্যাহীন
মুখেরা আমায় পরখ করছে। ভাবছি, কান্নার টুঁটি চাপা যায় কীনা! ফিনকি ফুটলেই সন্ধির কাছাকাছি চলে আসা যাবে, বিষদাঁতে এইসব টুকরো রেখেছি। আমার ঘুমে দানা মেলছে, খুব সরু ও রুগ্ন এক দেশ। আর রক্ত যখন শিরোনামহীন, আমি কাঁটাচামচের কথা ভাবছি, ভাবছি কিভাবে খুবলে নিতে হবে আস্ত এক জ্যান্ত ভাগাড়.....
লাশ
মৃতদেহ তুলতে আমার কষ্ট হয়
মৃতদেহ ভুলতে আমার কষ্ট হয়
যদিও ইদানীং
মৃতদেহ খোঁজাই আমার কাজ
এই মুদ্দাফরাস জীবনে
তাই নিজের নাম রেখেছি মৃতদেহ
রাষ্ট্র চাইলে শনাক্ত করুক
আখরোট
ঝাঁঝরা হবার সময়
ছেলেটির নীল ডেনিম ফুঁড়ে চাঁদ
কোথাও রক্ত দানাদানা
আপেলের শব্দে ঘুম ভাঙছে মানুষের
এখন কাফন দাফনের সময়
বুলেটে দেশের কথা লেখা নেই
আর অন্ধকার যতোদূর পাথরে বসেছে
চাউনি বরফে
কুপওয়ারা এখন ঠাণ্ডা আর স্যাঁতসেতে
আয়ুনির্ভরতা সরিয়ে আজান ক্রমশ
স্বচ্ছ ও বিপজ্জনক
আখরোট বাগানে
খেলা করছে দুদেশের দাঁত
কিছু পেলেট স্মৃতি
অন্ধ মণিতে থম হয়ে আছে
দেওয়াল লিখন
যেভাবে ঢাল ফেলছো
আর গড়ে ওঠা হাহাকার
শারদীয়া বৈঠায় শীতেরা শরীর হয়ে উড়ছে
তুমি জানো
সাদা পোশাকে কোনও দাগ লেগে নেই
পাথর তবুও তোমায় পড়তে চেয়েছে
হেরে যাওয়া ছদ্মবেশ তোমার প্রিয়
কাঁটাতারে ঢেকে যাচ্ছে মানুষ
আর সময়সীমা
তোমার জন্য দেশ একটি নিষিদ্ধ শব্দ
ট্রায়াল আর এরর
ট্রায়াল আর এরর
কম্পাস গড়িয়ে নামা জনস্রোত
তোমার প্রতিবেশী
বিশ্বাসে রক্ত ভেঙে গেলে
তুমি নৌকো ভাসাতে জানো না
জানো না, শুকনো মন্দিরের গায়ে
দাঁড়বাওয়া দেওয়াল লিখন
ত্রাণশিবির
আশ্চর্য্য সরিয়ে রেখেছি
রাস্তা থেমে আছে গলিতে
আঁকাবাঁকা রোদের অন্ধকারে
ওড়া থামিয়ে
পোষমানা পায়রারা এখন চুপ
আর জবাই হবার মূহূর্তে
আয়নায় থমকে আছে শরণার্থী জল
শংসাপত্রে দেশ খানখান হয়ে ভেসে আছে
প্রতিটি নবমী আমার অজ্ঞাতবাস
ফুল অথবা বর্ষা সরিয়ে রাখা ত্রাণশিবির
আমার দুহাত ছাপানো কালো
পাথরের কাছে আমার জবাবদিহি
শেকড়ে কোনও মায়া রেখে যাচ্ছি না....
ফুলের জলসায়
একটা তুলোর শহরে
পাথরের কথা বলতে হয়
বলতে হয়
স্যাঁতসেতে ভীতু রূপকথার কথা
নোনাধরা পতাকার নীচে
অস্ত্র কবেই ধুয়ে ফেলেছে মানুষ
জলভর্তি খিদেও
উড়িয়ে দিয়েছে আকাশে
তার ন্যাংটো ছায়া
তাকে দেখছে
কাগজের ঘরকন্না তাকে দেখছে
দেখছে, চরম মূহূর্তে কীরকম
শিরদাঁড়া ফেলে আসা যায়.....
উলুসিঁদুর
শহর পুষতে পুষতে হাঁফ ধরে আজকাল
গুছিয়ে ওঠার
কায়দা শেখানো এই তোফাখানা
সুরঙ্গভর্তি মৌচাক বেরিয়ে এসেছে
শিক্ষা টপকে ভক্তির কাঠামো চেনাচ্ছে
কিছু উলুব্যবসায়ী
সিঁদুরের ডালপালায়
নদী লুকিয়ে রাখছে কেউ
ডালভাতে ঢুকে পড়ছে
চামড়ামন্দির, তাঁত ও শবযাত্রা
আর গণগণে তুলে রাখা জলে ভেড়াদের
সারারাত ভেসে যেতে দেখেছি
দেখেছি
কীভাবে ধর্ষণ দেশের স্বাস্থ্য হয়ে ওঠে

শৌভিক দত্ত জন্ম শিলঙ পাহাড়ে লেখালেখির শুরু নব্বই দশকের শেষদিকে। প্রকাশিত বই : হায়ারোগ্লিফিকস রাত হাঁটা রোমিং স্টেশন কথা বলা চোখ নির্জন তামাক
Facebook Comments Box
